তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে, তাতে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ঢাকা পড়ে গেছে। এখন নির্বাচন উৎসব আমেজ শুরু হয়ে গেছে।’
সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রি হচ্ছে। রবিবার দেড় কিলোমিটার হেঁটে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গেছি। আর ভিড়ের কারণে আমাদের সাধারণ সম্পাদক ঢুকতেই পারেননি।’
বিএনপির ডাকা টানা হরতাল প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা গত ৪৮ ঘণ্টায় ১৮টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে। অবরোধ-হরতাল কেউ মানছে না, জনগণ এমনকি বিএনপি সমর্থকদেরও এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই।’
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ কেন বিএনপির অপরাজনীতি ও হিংস্রতার শিকার: বিএনপির কাছে তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন
তিনি বলেন, ‘রুহুল কবির রিজভী সাহেব অনলাইনে এসে যে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন এগুলো আসলে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো বা সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়ার কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। একটি স্কুলে এবং বসে থাকা একটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে, তিনটা বগি পুড়ে গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ তো নয়ই, এগুলো জঘন্য সন্ত্রাসী, দেশবিরোধী অপতৎপরতা। এরা দেশ ও সমাজের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু যারা গাড়ি-ঘোড়া-সম্পত্তি পোড়াচ্ছে তারাই নয়, যিনি কর্মসূচি ঘোষণা করছেন তিনি এবং এই নেতারা সবাই দুষ্কৃতিকারী।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই আগুনসন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাব, সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক, অনেক ক্ষেত্রে সমাজের পথপদর্শক, এই আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপনাদের লেখনী, রিপোর্টিং যদি অব্যাহত থাকে তাহলে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে কি না বা সংলাপ হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কাউকে ছাড়া নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। কেউ নির্বাচনে না এলে তাদের আনার দায়িত্ব সরকারের বা আওয়ামী লীগের নয়। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলে জনজীবনে অশান্তি, রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ নয়, এগুলো দৃস্কৃতিকারীদের কাজ। আর যারা এভাবে গাড়িতে আগুন দেয় এবং নেতাদের কাছে সেই ভিডিও পাঠায় আর নেতারা বলে আগুন দিলে প্রমোশন হবে, তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে কি -সে নিয়ে আপনাদের বিবেক কী বলে?’
বিএনপি নির্বাচনে বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা-নীতি প্রয়োগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত চমৎকার বহুমাত্রিক সম্পর্ক। বিশেষ করে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমন করার ক্ষেত্রেও আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতা আছে। র্যাবকেও যুক্তরাষ্ট্র ট্রেনিং ও ইকুপমেন্টও দিয়েছিল। ভিসা-নীতি ঘোষণার সময় বলা হয়েছে যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে এটি প্রয়োগ করা হতে পারে। এখন যারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে, আগুন সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এই নীতি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তাভাবনা করবে, ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
আরও পড়ুন: সমাজের জন্য অনুসন্ধানী রিপোর্টিং প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী