সরকারের সহায়তায় বেনজীর আহমেদ বিদেশে পালিয়েছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সরকারের কারা গিয়ে তাকে বিমানে তুলে দিয়েছে? কোন কর্তৃপক্ষ গিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে? অন্ধকারে ঢিল ছুড়বেন না।’
এদেশ থেকে টাকা পাচারের সংস্কৃতি ও অর্থনীতি বিএনপির আমল থেকে শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় এলে বিএনপি নেতারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এটা দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত সত্য।’
‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিএনপির দণ্ডিত পলাতক নেতা তারেক রহমান বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে।’
রবিবার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: বিএনপি দুর্নীতি ও লুটপাটের ওস্তাদ: ওবায়দুল কাদের
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বেনজীর আহমেদ বিদেশে থাকলেও বিচার চলবে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। সরকার কোনো ছাড় দেবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে। তদন্ত, মামলা, গ্রেপ্তার- সবকিছু একটা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সরকার এখানে দুদককে এড়িয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতিবিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তার বিচার হবে।’
এ সময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদেশে ৭৫ পরবর্তীকালে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটি দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। তবে দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী- সেটা দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুর্নীতি কোনো দেশে হয় না- এই দাবি কেউ করতে পারে না। আমাদের দেশের যিনি প্রধানমন্ত্রী, সরকারপ্রধান তিনি কোনো ধরনের দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন- এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কেউ দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা আপাদমস্তক সৎ রাজনীতিক- এটা বিশ্বে স্বীকৃত। তার জনপ্রিয়তার মূলে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী ও সৎ জীবনযাপন করেন।’
আরও পড়ুন: আজিজ-বেনজীরকে নিয়ে বিব্রত নয় সরকার: ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতা তারেক রহমানই দণ্ডিত পলাতক, চিহ্নিত অপরাধী। এমন লোক যে দলের নেতৃত্ব দেয়, সেই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। জনগণের বিশ্বাসও রাখতে পারে না।’
‘তারা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেই বিএনপি নিজেদের গঠনতন্ত্র থেকে ৭ ধারা বাদ দিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।