একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে বিএনপির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আবদুল মঈন খান দাবি করেছেন নির্বাচন বর্জনে তাদের আহ্বান সফল হয়েছে।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই দাবি করেন।
মঈন খান আরও বলেন, ভোটারবিহীন এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, 'শুধু বিএনপি নয়, যে ৬২টি রাজনৈতিক দল এই প্রহসনমূলক নির্বাচন বর্জন করেছে, তাদের সবার পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাই। কারণ, তারা গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো আপস করেনি। এবারও তারা তা করেনি।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আবারো আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে সরকার: ট্রেনে অগ্নিসংযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি
গণমাধ্যমে তোলা ছবিগুলো কথা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজার হাজার ছবি এসেছে। ভোটারদের অনুপস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রের সামনে কুকুরের দাঁড়িয়ে, শুয়ে থাকা এবং রোদ পোহানোর ছবি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, 'বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রই ভোটারশূন্য ছিল। তাই নির্বাচন বর্জনে আমাদের আহ্বান অবশ্যই সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, রবিবার সকাল থেকে সরকার আয়োজিত নির্বাচনি নাটকের শেষ অংশ মঞ্চস্থ হচ্ছে। 'মজার বিষয় হলো, আমরা এক বছর ধরে বলে আসছি, বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে, জনগণ ভোট বর্জন করায় আজ দেশের সবার সামনে তা প্রমাণিত।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করেছেন যে, সরকার গত ১০ বছরে গণতন্ত্রকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে নির্বাচনের সময় শত শত ভোটকেন্দ্র ফাঁকা ছিল। ‘এটাই বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে প্রহসনের বাস্তবতা।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করায় তারা জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। ‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ড. মঈন বলেন, আওয়ামী লীগ এ ধরনের প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে শুধু দেশের জনগণকেই প্রতারিত করেনি, দলীয় লোকদেরও প্রতারিত করেছে। 'এই নির্বাচনের পরিণতি ভালো হবে না'
আরও পড়ুন: রবিবারের ভোট বর্জন করুন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান: রিজভী
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের নামে কোনো ভুয়া ও জালিয়াতির নির্বাচন ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি না। অনেকেই এই সরকারকে স্বৈরাচারী শাসন বলে আখ্যায়িত করেন। মানুষ এই শাসনব্যবস্থাকে বিভিন্ন নামেও ডাকে। আমি বলছি, এই সরকার গণতন্ত্রের ভান করছে। যেসব সরকার গণতান্ত্রিক হওয়ার ভান করে তারা স্বৈরাচারী সরকারের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক।’
মঈন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন গত দুটি জাতীয় নির্বাচনের মতো ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা বাড়িয়ে দেখাবে। ‘কিন্তু এটা আমাদের উদ্বেগের বিষয় নয়, কারণ বাংলাদেশের ভোটাররা কীভাবে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে, তা দেশের জনগণ এবং সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের অনেক সমর্থকও ভোটকেন্দ্রে যাননি কারণ তারা জানতেন যে তাদের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত।
তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের ভোটাররা জানেন, আমাদের প্রার্থীরা পাস করেছেন এবং জয়ী হয়েছেন। কেন আমরা অযথা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সময় নষ্ট করব? আওয়ামী লীগের ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করেনি।’
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনেও রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছে: রিজভী