বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে হিন্দুবিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আওয়ামী লীগের অপপ্রচার জনগণ বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে এমন অপপ্রচার চালায়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি হচ্ছে একটা হিন্দুবিরোধী সংগঠন।’
শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ফখরুল তাদের কাছে জানতে চান, তারা বিশ্বাস করেন কি না- যে বিএনপি হিন্দুবিরোধী দল।
তিনি বলেন, ‘আমরা জোর গলায় বলতে পারি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা (হিন্দুরা) নিরাপদে থাকে। সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার রয়েছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে খেলতে ইসি ‘অচেনা’ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে: ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় গণতন্ত্র অপরিহার্য। তাই গণতন্ত্রের সংগ্রামে আমাদের জয়ী হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কথায় কথায় বলে, তারা দেশের সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক দল। তারা কতটা অসাম্প্রদায়িক তা আপনারা জানেন। আমরা ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল দেখেছি। আওয়ামী লীগের লোকেরা এই দেশে আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করেছে।’
বর্তমান সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বিহার ও সম্প্রদায়ের উপর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জমি ও সম্পত্তি দখল করার জন্য আক্রমণ করেছিল। তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অপমান করার জন্য তাদের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার জন্যও এটি করেছিল। মানুষ এখন এটা বুঝতে পেরেছে এবং তারা এটাকে বিশ্বাস করে না এবং মেনেও নেয় না।’
১৯৯২ সালে ভারতের বাবরি মসজিদে হামলার সময় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য তৎকালীন বিএনপি সরকারের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার বিশাল মিছিল
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কেউ-ই নিরাপদ বোধ করেন না। যে কোনো সময় কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো যেতে পারে বলে সাধারণ মানুষও নিরাপদ বোধ করে না।’
গণতন্ত্র ও হারানো সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ফখরুল যুবকদের অনুরোধ করেন, তাদের কমিউনিটির সদস্যসহ সব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং অনুপ্রাণিত করতে হবে যে গণতন্ত্রের এই লড়াইয়ে তাদের জিততে হবে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে তাদের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেককে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল