অযথা সময় নষ্ট না করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটিটে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে যে ছাত্ররা একসময় নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখন নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় তারাই ফ্যাসিস্টদের জায়গা করে দিচ্ছে।’
এ সময়ে সরকারে বসে সরকারের সব সুযোগ–সুবিধা নিয়ে দল গঠন করলে তা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার তিনি। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তা না হলে জনগণের যে আস্থা আপনাদের ওপর আছে, সেই আস্থা আপনাদের ওপর আর থাকবে না।’
আরও পড়ুন: দ্রুত সময়ে নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিন: মির্জা ফখরুল
সরকারের এক উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে এ প্রসঙ্গে ফখরুল আরও বলেন, ‘তখন তিনি বলেছিলেন আমি নাকি এক–এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক–এগারোর ভুক্তভোগী। এক–এগারো যারা তৈরি করেছে তারা টিকতে পারেনি মানুষের কাছে। আবারও হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই যদি আবার কেউ সেই এক–এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে সেই একদলীয় শাসন ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান, তাহলে কখনোই জনগণ তা মেনে নেবে না।’
নতুন যেকোনো রাজনৈতিক দলকে বিএনপি স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রসংগঠন ইতিমধ্যে করেছেন, আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। যখনই দল তৈরি করবেন, স্বাগত জানাব। তার অর্থ এই নয় যে আপনারা সরকারে বসে সরকারের সব সুযোগ–সুবিধা নিয়ে আপনারা আপনাদের দল গঠন করবেন। সেটা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।’
দেশ একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে গণতান্ত্রিক শাসনে যাওয়ার জন্য একেবারে তৈরি হয়ে আছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গোটা দেশের মানুষ এখন সেটাই চায়, তারা যাতে অতি দ্রুত একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত সাত মাসে সেই জায়গায় যেতে পারিনি। আমরা দেখছি, নতুন সরকার অন্তর্বর্তী সরকার আমরা তাদের সমর্থন দিয়েছি, তারা চেষ্টা করছেন অতি দ্রুত কিছু কাজ শেষ করে এই নির্বাচনের দিকে যাওয়ার। কিন্তু এরই মধ্যে কতগুলো সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে।’
আরও পড়ুন: সরকারে থাকার খায়েশ থাকলে নির্বাচনে আসুন: উপদেষ্টাদের উদ্দেশে ফখরুল
সেই সন্দেহটা হচ্ছে যে আদৌ নির্বাচন নিয়ে এরা আন্তরিক কি না বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘কারণ আছে এই সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার। তার মধ্যে গতকাল স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তারা অংশ নিতে পারবে।’
আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রদলের ইমেজ (ভাবমূর্তি) নষ্ট করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কুয়েটে কে এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাকে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদল ‘গুপ্ত’ রাজনীতির অবসান চায়। এই রাজনীতি আর চলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী নামধারী ‘গুপ্ত’ সংগঠনের এক নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।