বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টিও (এনসিপি) প্রস্তাব করেছে যে, শুধু জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, ‘সবাই চায় জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হোক। আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হলে সেটাও ভালো হবে।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনার মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়ে সরোয়ার বলেন, এনসিপি চার মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু দল ৬ মাসের মেয়াদের পক্ষে। এ বিষয়টি এখনও বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তিন মাস না চার মাস—এনসিপি এই বিষয়ে নমনীয়। তবে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন এতে অন্তর্ভুক্ত হয়—তাহলে চার মাস প্রয়োজন হতে পারে।’
অন্যদিকে, বিএনপি কেবল জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়। এ ধরনের সরকারের মেয়াদ ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে সীমিত রাখার পক্ষে দলটি।
সরোয়ার তুষার জানান, এনসিপি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের পক্ষেও মত দিয়েছে, যাতে সংসদ সদস্যরা অর্থ বিল এবং অনাস্থা প্রস্তাব ব্যতীত অন্য সব বিষয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেন।
এর আগে, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় এবং স্থানীয় উভয় নির্বাচনই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য তাদের দল প্রস্তাব করেছে।
দ্বিতীয় দফার আলোচনার মঙ্গলবারের অধিবেশন সকাল ১১টায় কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে শুরু হয়। বিএনপি, জামায়াত এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) সহ প্রায় প্রায় ৩০টি দল এই বৈঠকে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: জামায়াত স্থানীয় সরকার নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়: ডা. তাহের
সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার উদ্বোধন করেন।
জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারমূলক উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ২০ মার্চ প্রথম দফার সংলাপ শুরু করে।
কমিশন ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে—যার মধ্যে ছিল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। গত ১৯ মে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফার সংলাপ শেষ করে কমিশন।
কমিশনটি চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়। কমিশনের লক্ষ্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার নিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানো।