সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি তার মেয়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দারের ফুলার রোডের বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে স্ট্রোক করার পর চলাচলের শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
বাদ যোহর জানাজা শেষে রশীদ হায়দারকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রশীদ হায়দারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণাকর্ম এবং বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য রশীদ হায়দার স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
রশীদ হায়দারের জন্ম ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাই পাবনার দোহাপাড়ায়। তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করেন।
তিনি ১৯৬১ সালে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন চিত্রালীতে লেখক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে পরিক্রম ম্যাগাজিনে সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে তিনি গবেষণা সহকারী হিসেবে ন্যাশনাল বুক সেন্টার অব পাকিস্তানে যোগ দেন।
রশীদ হায়দার ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে পরিচালক হিসেবে অবসরে যান। পরে তিনি কবি নজরুল ইনস্টিটিউটে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন নাট্যদল ‘নাগরিক’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
রশীদ হায়দার তার কাজের অবদানের জন্য ২০১৪ সালে একুশে পদক এবং ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন।
তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে- খাঁচায়, চিম্বুকের নিচে আলোর প্রভা, তিনটি প্রায়োপন্যাস, বাংলাদেশের খেলাধুলা, মুক্তিযুদ্ধের নির্বাচিত গল্প, সামান্য সঞ্চয় (নির্বাচিত গল্পসংকলন), স্মৃতি’৭১ (১৩ খণ্ড), ১৯৭১: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থ, খুঁজে ফিরি ও অসম বৃক্ষ।
রশীদ হায়দার দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আনিসা হায়দার ২০১৯ সালে মারা যান।