১৯১৪ সালের আজকের এই দিনে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি এ শিল্পী কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ফোক আর্ট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার পিছনে এ মানুষটির হাত ছিল।
চলমান কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বল্প সংখ্যক কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে তার জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আজ জয়নুল উৎসবের ভার্চুয়াল সংস্করণের আয়োজন করছে।
সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অনুষদ সদস্যরা শিল্পাচার্যের সমাধিতে ফুল দিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে জয়নুল আবেদীনের জীবন ও কর্মের উপর ভার্চুয়াল ফটোগ্রাফি ও শিল্প প্রদর্শনী অনুষদের ওয়েবসাইট www.fineart-du.com এ সম্প্রচার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার নকীব খান করোনায় আক্রান্ত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিল্পী ও উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের কর্ম নিয়ে আর্টকন-এর সাথে থ্রিডি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির সহযোগিতায় এ ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে আঁকা ছবিগুলোর জন্য তিনি বিখ্যাত। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে কাটানো শৈশবে শিল্পের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠেন জয়নুল। ১৯৩৩ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ছেড়ে স্থায়ীভাবে মাতৃভূমি বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ফিরে আসেন।
ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পেছনে জয়নুল সক্রিয়ভাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯৪৯ সালে এর অধ্যক্ষ হন। পরে এ ইনস্টিটিউট থেকেই আজকের চারুকলা অনুষদে হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিল্পকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে: দোরাইস্বামী
ইনস্টিটিউট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চারুকলা অনুশীলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল এবং জয়নুলের শৈল্পিক নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে শিল্পীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান এবং ইনস্টিটিউট থেকে তাকে শিল্পাচার্য (চারুকলার গুরু) উপাধিতে ভূষিত হন।
আরও পড়ুন: ১৮তম দ্বি-বার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি
১৯৭৩ সালে জয়নুল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লেটার্স (ডি-লিট) পান। ১৯৭৫ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ঘোষণা করা হয়। ২০০৯ সালে এ আইকনিক চিত্রশিল্পীর সম্মানে নাসা বুধ গ্রহের একটি গর্তর নাম রাখেন ‘আবেদীন ক্রেটার’।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৬ সালের ২৮ মে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মারা যান।