তবে করোনাকালের বাস্তবতায় অনাড়ম্বর আয়োজনে এবার এই লেখককে স্মরণ করা হলো।
রবিবার সকালে লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই ছেলে নিনিত ও নিষাদ হুমায়ূনের উপস্থিতিতে কবর জিয়ারত করা হয়।
পরিবারের লোকজনের সাথে হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশক, শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় লেখকের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করা হয়।
কবর জিয়ারত শেষে হুমায়ূন আহমদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন গণমাধ্যমকে হুমায়ূনের স্বপ্ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে পারিবারিক সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ক্যান্সার হাসপাতাল ও জাদুঘর নির্মাণ শুরু করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রতিবছর সকাল থেকে হুমায়ূন পরিবার, তার ভক্ত, কবি, লেখক এবং নাট্যজনেরা ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন নুহাশপল্লীর লিচু তলায়। নন্দিত লেখকের প্রিয় চরিত্র হলুদ পাঞ্জাবিতে হিমু এবং নীল শাড়িতে রূপা সেজে আসেন ভক্ত ও পাঠকেরা। এবার করোনা ঝুঁকিতে স্বাস্থ্যবিধির বাধ্যবাধকতা থাকায় দূর দূরান্তের বিপুল সংখ্যক লেখক ভক্তরা নুহাশপল্লীতে না এলেও কিছু সংখ্যক ভক্ত অনুরাগী উপস্থিত হয়েছিলেন। তারা লেখকের প্রতি অতল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা জানান।
প্রয়াণ দিবসের স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশকেরা।
এখানে আসা অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে ততদিন হুমায়ূন আহমেদ পঠিত হবে।’
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তার বাবা ফয়েজুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজ। ১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই খ্যাতি লাভ করেন তিনি।
বাংলাদেশে পাঠকপ্রিয় এই লেখক দুই শতাধিক ফিকসন ও নন-ফিকসন বই লিখেছেন। হিমু, মিছির আলীর মতো চরিত্র দিয়ে লাখো-কোটি পাঠক-ভক্ত তৈরি করেছেন এই কথার জাদুকর। ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে তার বইগুলো একুশে বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রি হয়।
তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখকদের মধ্যে অন্যতম গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।
বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ূন আহমেদকে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক দেয়া হয়। ২০১২ সালে ১৯ জুলাই মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিউইয়কের্র একটি হাসপাতালে মারা যান।