তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার কারিকোনা গ্রামের সমশাদ আলীর ছেলে ও ইস্টার্ন ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখার সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা।
নিহতের ছোট ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী কাওছার আহমদ জানান, বুধবার রাতে যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে ফরিদ উদ্দিন আহমদের মরদেহ নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সিলেট বিমান বন্দরে লাশ এসে পৌঁছে। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও ফরিদের স্বজনরা বিমানবন্দরে তার লাশ গ্রহণ করেন।
ইউক্রেন থেকে ফ্রান্স যাওয়ার পথে গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে স্লোভাকিয়ায় নিহত হন ফরিদ।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে রাশিয়া যান ফরিদ উদ্দিন আহমদ। খেলা শেষ হওয়ার মাস খানেক পর তিনি রাশিয়া থেকে ইউক্রেন যান এবং সেখান থেকে গত ২৮ আগস্ট দালালের মাধ্যমে ৫জন সঙ্গীর সাথে ইউক্রেন থেকে ফ্রান্সের উদ্দেশে পায়ে হেঁটে যাত্রা করেন ফরিদ। এরপর ২ সেপ্টেম্বর ফরিদের সঙ্গীরা ফ্রান্স পৌঁছালেও নিখোঁজ হয়ে যান ফরিদ।
পরিবারের পক্ষ থেকে দালাল ও সঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে পরিবারের সঙ্গে তারা নানান টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর স্লোভাকিয়ার স্টারিনার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার একটি পর্যটন স্পট থেকে ফরিদের মরদেহ উদ্ধার করে সেদেশের পুলিশ। ওই দিন অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ‘জওজে টিভি’র বরাত দিয়ে সেদেশের ‘নোভেনী ডট এসকে’ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদটি প্রচার করে।
ফরিদের স্বজনরা যুক্তরাজ্য থেকে স্লোভাকিয়ায় গিয়ে সেদেশের একটি মর্গে ফরিদ উদ্দিন আহমদের লাশ শনাক্ত করেন। এরপর লাশ দেশে নিয়ে আসতে তারা অনেক প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে লাশ বাংলাদেশে নিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেন ফরিদের স্বজনরা। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অবশেষে দেশে আনা হয় ফরিদ উদ্দিন আহমদের লাশ।
নিহতের ভাই আলা উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন ‘আমরা ধারণা করছি আমাদের ভাইকে স্লোভাকিয়ার জঙ্গলে হত্যা করে সেখানেই ফেলে রেখে দালাল ও তার সঙ্গীরা ফ্রান্সে চলে যায়। নিখোঁজের পর থেকে তারা (দালাল ও ফ্রান্স যাত্রাপথের ফরিদের সঙ্গীরা) আমাদেরকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ভাই (ফরিদ) এখনও জীবিত রয়েছেন বলে আমাদেরকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে আসছিল।’
তারা বলেন, ‘মাত্র ২ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে এবং বাকিটা রাস্তা বৈধভাবে গাড়িতে করে ফ্রান্স পৌঁছানোর কথা বলে দালালেরা আমাদের ভাইয়ের সাথে প্রতারণা করেছে ও হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।’