সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব নুমেরী জামান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনসহ ১৮ জন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে, আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজসহ হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।
উল্লেখ, গত ১২ নভেম্বর মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। বিধিসম্মত না হওয়ায় ইউএনও তা নাকচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান।
এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও কার্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার কারণ জানতে চাইলে ইউএনওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করেন।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ইউএনওসহ ১৮ জন কর্মকর্তা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ডিসি বরাবরে গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ১৬ নভেম্বর ৩৭ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠায় জেলা প্রশাসন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে গত ২৪ নভেম্বর সরেজমিন তদন্ত করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওহাব ভূঞা।
গত ১৫ নভেম্বর নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৫৫৮) করেন ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।
একই দিন যৌথ স্বাক্ষরিত উপজেলার রাজস্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবের ১৯টি চেকের পাতা ছিঁড়ে ফেলায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় আরেকটি সাধারণ ডায়েরি করেন (জিডি নং ৫৫৯) দায়ের করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্টেনোটাইপিস্ট হাবিবুর রহমান।
এদিকে, একই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে ইউএনও’র বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক।
ইউএনওসহ কর্মকর্তাদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে দাবি করে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনও’র নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানান চেয়ারম্যান ফারুক।
এ ঘটনার পর থেকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।