আন্তঃজেলা বাসগুলো কাঁচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালসহ ঢাকার অদূরে নির্মাণ হতে যাওয়া টার্মিনালগুলো এবং ঢাকার অভ্যন্তরে পরিচালিত নগর পরিবহনগুলো সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে কাঁচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস প্রান্ত (টার্মিনাল) নির্মাণের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তাপস এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: এডিস নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে: শেখ তাপস
শেখ তাপস বলেন, আমাদের যে বাস টার্মিনালগুলো আছে সেগুলো ৮০’র দশকে করা হয়েছে। তখন শুধু টার্মিনাল হিসেবে করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত ওই টার্মিনালগুলোকে ঘিরেই আন্তঃজেলা এবং সিটি বাস সব এক জায়গায় রাখা হতো।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা সে প্রেক্ষাপটে এখন তা আর কার্যকর নয়। তাই বাস রুট রেশনালইজেশন কমিটির মাধ্যমে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি, আন্তঃজেলা বাসগুলোকে ঢাকার বাইরে রাখতে হবে। আর ঢাকার মধ্যে যে টার্মিনালগুলো রয়েছে সেখানে শুধু নগর বাসগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
প্রাথমিকভাবে কাঁচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল চালুর এসব কার্যক্রম নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ভূমি উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা এখানে আরও কিছু কাজ শুরু করব। যেমন- সীমানা প্রাচীর দিতে হবে। কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। কী ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করলে তারা সুষ্ঠুভাবে এখানে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে, সে বিষয় নিয়ে আলাপ করে আমরা অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ দেব।
তিনি বলেন, এই পুরো কাজ আমাদের নিজস্ব অর্থায়নেই এখন পর্যন্ত আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। পরে দীর্ঘমেয়াদে যাতে করে আমরা একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে পারি, এরই মধ্যে আমরা সেসব পরিকল্পনা শুরু করেছি।
তাপস বলেন, আমাদের দুটো টার্মিনাল- একটি বাঘাইড়ে আরেকটি এই কাঁচপুর বাস টার্মিনাল। এই দুটো বাস টার্মিনালের জন্য আমরা পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। পরামর্শকের মাধ্যমে আমরা পূর্ণভাবে এই টার্মিনালগুলোর নকশা প্রণয়ন করব। পরে পূর্ণভাবে আমরা সেটা নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করব।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, শুধু কাঁচপুরে বাস টার্মিনালই নয় সমন্বিত অনেক কার্যক্রম একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা যেমন বাস রুট রেশনালাইজেশনের কার্যক্রমের আওতায় যাত্রাপথগুলোকে নির্ধারণ করছি তেমনি সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকে আরও আধুনিক করছি এবং সেটার পরিসর বৃদ্ধি করেছি।
মেয়র আরও বলেন, আগামী বছর এটা চালু হয়ে গেলে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার বাস আর সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবে না। সেগুলো কাঁচপুরে চলে আসবে এবং তারা ঢাকা শহরের ভেতরে আর প্রবেশ করবে না।
তিনি বলেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই ঢাকার যানজট একটা সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে। আর সুশৃঙ্খল যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় যে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করেছি, সেসব বাসে এই কাঁচপুর হতে ঢাকাগামী যাত্রীদের পরিবহন করবে। ফলে গণপরিবহন পূর্ণ রূপে শৃঙ্খলায় চলে আসবে।
মেয়র এ সময় চলমান ভূমি উন্নয়ন কাজ প্রায় ৫০ শতাংশ শেষ এবং বাকি কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান।
এছাড়াও সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণকাজ আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় ঈদগাহে ঢাকাবাসীকে অভ্যর্থনা জানাতে আমরা প্রস্তুত: শেখ তাপস