গত ৪ মার্চ কুষ্টিয়া মডেল থানায় চারজন ও কুমারখালী থানায় একজনের নামে মামলা দুটি দায়ের করেন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই জাবিদ হাসান জানান, আলোচিত এ ঘটনায় একটি মামলায় ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব নওয়াবুল ইসলাম, ফরিদপুরের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, মাগুরা সদরের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস ও কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিস সহকারী জিএম সাদিক সত্যবাদীকে আসামি করা হয়েছে। একইদিনে অন্য একটি মামলা হয়েছে কুমারখালী থানায়। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে কুষ্টিয়া সদরের নির্বাচন কর্মকর্তা সামিউল ইসলামকে। ঘটনার সময় তিনি কুমারখালী উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুন: অস্ত্র মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত
মামলা দায়েরের বিষয় নিশ্চিত করে জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, গত বছর জালিয়াতির মাধ্যমে ছয়জনের এনআইডি পরিবর্তন করে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট এলাকার প্রায় শত কোটি টাকা মূল্যের ১৭ কাঠা জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টা চালায় প্রভাবশালী একটি চক্র। ওই সময় জমির মালিক ওয়াদুদ কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় নির্বাচন অফিসের পক্ষ থেকে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এসব মামলায় দণ্ড বিধির ৪২০, ৪৬৮/১০৯ ধারা ছাড়াও ২০১০ সালের ভোটার তালিকা আইন এবং ডিজিটাল নির্বাচন আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডে ওয়াদুদ ও তার পরিবারের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেয় একটি জালিয়াতি চক্র। এ ঘটনায় কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশের তদন্তে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে জালিয়াতি চক্রের মূল হোতাদের নাম। এনআইডি জালিয়াতি করে শত কোটি টাকার জমি দখলের মূলহোতা কুষ্টিয়া শহরের বেঙ্গল হার্ডওয়্যারের মালিক ব্যবসায়ী মহিবুল এবং যুবলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান সুজনসহ সাতজন গ্রেপ্তার হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচার চলছে। বাকিরা এখনও পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেওয়ানি আদালতের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়িয়ে বিল পাস
মামলার এজাহারে শত কোটি টাকার জমি দখল ও এনআইডি জালিয়াতি চক্রের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নকারী হিসেবে এসব নির্বাচনী কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলো বলে জানান বাদী জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে লাইসেন্সবিহীন সব ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ আদালতের