তারা হলেন- কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার নেউরা গ্রামের শরীফ হোসেনের ছেলে বাসচালক আরিফ হোসেন সোহেল (২৬) ও ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কামিনারবাগ গ্রামের শেখ ওয়াজেদের ছেলে বাসের হেলপার বাবু শেখ (২২)। তারা দুজন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াবাড়ি (পদুয়ার বাজার) ও মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকায় বসবাস করে।
তবে, অভিযুক্ত অপর ধর্ষক বাসের সুপারভাইজার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আটচাইল গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে আলমকে (৩২) এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আদালতে গ্রেপ্তারকৃতদের উভয়ের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগী তরুণীর চিকিৎসা, ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়েছে।
পুলিশ, মামলার বিবরণ ও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণী (১৬) গত সোমবার বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে থেকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিশা প্লাস পরিবহনের একটি বাসযোগে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছার উদ্দেশ্যে রওনা করে। ওই তরুণী বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে শাসনগাছা বাস স্টেশনে তাকে নামিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। তবে তারা তরুণীকে নগরীর শাসনগাছায় না নামিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার পর কৌশলে বাসটি জেলা সদরের অদূরে সদর দক্ষিণ থানাধীন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের আল-শাকিল হোটেলের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে ওই তরুণীকে হেলপার বাবু শেখ, চালক আরিফ হোসেন সোহেল ও সুপারভাইজার আলম মিলে তাকে ধর্ষণ করে। পরে ওই তরুনীকে পদুয়ার বাজার এলাকায় বাস হেলপার বাবু শেখের বসতঘরে নিয়ে পুনরায় তাকে ধর্ষণ করে। সকাল ৬টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনার পরে ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে তিনজনের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
তরুণীর মা জানান, তার মেয়ে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখনায় চাকুরি করতো। করোনার কারণে পাঁচ মাস আগে বাড়ি চলে আসে। ১১ সেপ্টেম্বর চাকুরির খোঁজে ঢাকায় যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হয়। তার মেয়ের উপর নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
এদিকে, তিশা প্লাস পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ওই গাড়ির মালিক দুলাল হোসেন অপু জানান, ঘটনার পর আমরা ওই বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৩৯৮) চালক ও হেলপারসহ দুই আসামিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, চালক বাবু শেখ ও হেলপার আরিফ হোসেন সোহেলকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে উভয়কে সাত দিনের রিমান্ড নেয়ার আবেদন করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে এবং মামলার অপর আসামি আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।