শুক্রবার রাতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ শাহীদূল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একটি তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) আশীষ কুমার মন্ডল। কমিটির অন্য চার সদস্য করা হয়েছে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-বীরবল মন্ডল, পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এস এম রাজিব বিল্লাহ এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্ট রেজওয়ান উর রহমান। কমিটিকে আগামী ২৪ ঘন্টার (শনিবার) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, ট্রেন চলাচল বন্ধ
কুষ্টিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার এম এ জামান জানান, বারবার বলার পরও শ্রমিকেরা রেললাইন থেকে ট্রলি সরিয়ে না নেয়ায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেলপথের কুষ্টিয়া রেলস্টেশন সংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করা স্টেশনে কর্মরত এক কর্মচারী (লাইনম্যান) মো. ইব্রাহীম বলেন, ট্রলির শ্রমিকদের বারবার ট্রলি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ট্রলির শ্রমিকেরা ট্রলি না সরিয়ে নিয়ে উল্টো লাল নিশানা দিয়ে ট্রেন থামানোর কথা বলেন। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন ঢুকে পড়ায় ঘটে দুর্ঘটনাটি।
পাকশী রেল বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল মন্ডল বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পৌছে তদন্ত শুরু করবেন। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী অন দ্যা স্পট তদন্ত রিপোর্ট নেয়া হবে।
এদিকে এ দুর্ঘটনার পর থেকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে পাঁচটি ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৫টায় ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার বিকাল নাগাদ এই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।
এর আগে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেলপথে কুষ্টিয়া স্টেশন সংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় মালবাহী ট্রেনের সাথে রেলওয়ে ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কেউ হতাহত হয়নি। তবে মালবাহী ট্রেনের মাঝের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। মালবাহী ট্রেনটিতে মোট ২২টি বগি রয়েছে। প্রতিটি বগি গমভর্তি ছিল। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ফরিদপুর যাচ্ছিল।
ট্রেনের চালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া স্টেশন থেকে ক্লিয়ারিং পাওয়ার পর তিনি ট্রেনটি নিয়ে কুমারখালীর দিকে যাচ্ছিলেন। ২০০ গজ যাওয়ার পর মিলপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে এসে তিনি দেখতে পান রেললাইনের ওপরে রেলের একটি ট্রলি দাঁড়ানো অবস্থায় আছে। কিন্তু ট্রেন থেকে ট্রলিটি মাত্র ৫০ গজ দূরে অবস্থান করায় তিনি তা দেখতে পেয়ে ব্রেক কষেও ট্রেন থামাতে পারেননি।