গুলিতে নিহতরা হলেন- আটরা-গিলাতলার মশিয়ালী এলাকার মো. বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০), একই এলাকার মো. ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) এবং মো. সাইদুল শেখের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২৭)।
পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে জেহাদ নামে একজনকে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও সাতজন। তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে আফসার শেখ (৬৫) নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি খুমেক হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন।
এদিকে, হত্যাকারী সন্দেহে মশিয়ালী গ্রামে হাচান আলী শেখের ছেলে জাকারিয়া শেখ, জাফরিন শেখ ও মিলটন শেখের বসতবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রাত ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাকারিয়াকে থানা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে গুলি রেখে মজিবার শেখ নামে একজনকে খানজাহান আলী থানা পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। এ ঘটনার জের ধরে রাত সোয়া ৮টার দিকে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে দুপক্ষ গ্রামবাসীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় জাকারিয়ার নেতৃত্বে অস্ত্রধারীরা গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত এবং গুলিবিদ্ধ হন আটজন। পরে তাদের মধ্যে একজন হাসপাতালে মারা যান।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে একাধিক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম।
নিহতদের স্বজনরা জানান, মশিয়ালী আলিয়া মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া সভাপতি পদে পরাজিত হন। এ ঘটনার জের ধরে স্থানীয়দের সাথে তার বিরোধের সূত্রপাত হয়। ঘটনাস্থলে তিনি ও তার ছোট ভাই জাফরিন এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন।
জাফরিন খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।
এদিকে, রাত ১০টার দিকে উত্তেজিত জনতা আলিম জুট মিলের সামনে দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। জাকারিয়া এ মিলের সাবেক সিবিএ নেতা ছিলেন।
খানজাহান আলী থানার ওসি বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে পুরো মশিয়ালী গ্রাম জুড়ে।