সুন্দরবনের দুবলার চরে বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে সাড়ে ৬৩ কেজির দুটি ভোল মাছ। সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় মাছ দুটি কিনেছেন মোংলার ব্যবসায়ী আল-আমিন।
এর মধ্যে একটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, আরেকটির ওজন ২৭ কেজি।
ভালো দামে বিক্রির জন্য প্রক্রিয়াজাতের পর ভোল মাছ দুটি চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ সময় মাছ দু’টি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক লোকজন।
এ মাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়ে বলেও দাম অনেক বেশি বলে জানান স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
তারা জানান, বিগত ১০ বছরেও এত বড় মাছ ওঠেনি মোংলার বাজারে। প্রায় বিলুপ্তির পথে এ ভোল প্রজাতির মাছ। তবে মাঝে মধ্যে দুবলার চরের দু-এক জেলের জালে ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার
মোংলার মাছ বাজারের আড়তদার মেসার্স জয়মনি ফিশের মালিক আল-আমিন বলেন, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলে ফারুক হোসেনের জালে বৃহস্পতিবার রাতে বড় দুটি ভোল মাছ ধরা পড়ে। এর মধ্যে বড়টির ওজন সাড়ে ৩৬ কেজি আর ছোটটির ওজন ২৭ কেজি। মাছ দুটি শুক্রবার সকালে দুবলার চরের আড়তে নিলামে বিক্রির জন্য ওঠানো হয়। এ সময় ২৫ ব্যবসায়ী অংশ নেন।
আল-আমিন আরও বলেন, নিলাম ডাকে সর্বোচ্চ দামে মাছ দুটি আমি কিনে নিই। বড়টি ১১ লাখ ও ছোটটি সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম পড়েছে। এরপর মাছ দুটি চর থেকে আমার মোংলার আড়তে নিয়ে আসি। বরফ ও পলিথিনে মুড়িয়ে শনিবার বিকালে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
মোংলা মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফারাজী বলেন, ভোল মাছ এই অঞ্চলে খুব কম পাওয়া যায়। পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে আগে পাওয়া গেলেও এখন দুর্বৃত্তরা বিষ দিয়ে মাছ ধরায় পাওয়া যায় না। এ জন্য আমাদের আড়তেও আসে না। দুবলার চরে পাওয়া মাছ দুটি আড়তে এসেছে। সেগুলো চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বেশি দাম পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, ভোল মাছের ফুলকি ও পটকার দাম প্রচুর। এই মাছের পটকা ও বালিশ রফতানি হয়। শুনেছি এসব দিয়ে মেডিসিন তৈরি করা হয়।
সামুদ্রিক ভোল মাছ খুবই দামি উল্লেখ করে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে এক ধরনের সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা বিদেশে ওপেন হার্ট সার্জারির কাজে লাগে। এছাড়া বিয়ার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয়।