দুবলার চর
দুবলার চরের শুঁটকি শ্রমিকরা যেভাবে ভোট দেন
বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চরে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চান শুঁটকি পল্লীর জেলেরা। সেখানে অবস্থানরত কয়েক হাজার জেলে ভোট উৎসবে যোগ দিতে বাড়ি উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালের জোয়ারে কয়েক হাজার জেলে তাদের নৌকা নিয়ে উপকূলের উদ্দেশে রওনা হন। ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে চান এসব জেলেরা।
শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে আসা জেলেদের মধ্যে প্রায় ৯ হাজারের অধিক জেলে ভোট দিতে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
ইউএনবির এই প্রতিবেদক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় বাগেরহাট জেলার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের আওয়াতাধীন দুবলার চরে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শুঁটকি মৌসুম চলে। আলোরকোল, মাঝের কেল্লা,নারিকেল বাড়িয়া ও শ্যালার চর নিয়ে গঠিত দুবলার চর।
শুঁটকি মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জেলে ওই চরগুলোতে অবস্থান করেন। অস্থায়ী ঘর বেঁধে জেলেরা ৪ মাসের জন্য পল্লী গড়ে তোলেন। জেলেরা সাগর থেকে মাছ আহরণ, কাটা-বাঁছা এবং শুকানোসহ নানা কাজে এই সময় ব্যস্ত থাকেন।
আরও পড়ুন: শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় দুবলার চরে জড়ো হতে পারেন ১০ হাজার জেলে
মৌসুম শেষ হলেই সাধারণত জেলেরা বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য জেলেরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। এসব জেলেদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, খুলনা সদর, কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরা সদর, আশুশুনি, চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায় বলে জানা গেছে।
দুবলার চর থেকে বিভিন্ন জেলেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা শুঁটকি মৌসুমে দুবলার চরে আসেন। এখানে আসার পর তারা সার্বক্ষণিক মাছ আহরণ, কাটা-বাছা ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু এ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তাদের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়। পছন্দের প্রার্থীর জন্য সাগর মোহনায় জেলেদের মধ্যে তারা প্রচার চালান। ভোট দিতে যাওয়ার জন্য জেলেরা একে অপরকে উৎসাহিত করেন।
বাগেরহাট জেলার রামপাল, মোংলা, খুলনা জেলার দাকোপ এবং সাতক্ষীরা এলাকার বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা হলে তারা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চান। বিভিন্ন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীও রয়েছেন। কোনো কোনো প্রার্থীর জন্য তাদের সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছেন শহরের সুবিধা
১০ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে কোটি টাকার মাছ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে বাগেরহাটের সুন্দরবনের দুবলার চরে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের মাছ নষ্ট হয়ে গেছে। পচে যাওয়া ওই সব শুঁটকি মাছ থেকে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
নষ্ট হয়ে যাওয়া মাছের পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার কুইন্টাল। এসব মাছ সাগরে ফেলে দিতে হবে বলে জানান দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন আহম্মেদ।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি শুক্রবার দুপুরে খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। এর প্রভাবে বুধবার সন্ধ্যা থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের বিভিন্ন চড়ে বৃষ্টি ঝরতে থাকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব এলাকায় ভারী বর্ষণ হয়। ঝড়ো বাতাস এবং বৃষ্টিপাতের কারণে সুন্দরবনের শেলার চর, নারিকেলবাড়িয়া, মাঝেরকেল্লা ও আলোরকোলে শুঁটকির জন্য শুকানো এবং কাচা অবস্থায় প্রায় ৬০ হাজার কুইন্টাল মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ওইসব মাছ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বাগেরহাটের মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। এ সময়ে সুন্দরবন উপকূল এবং সাগর মোহনায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেইসঙ্গে দমকা বাতাস বয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় দুবলার চরে জড়ো হতে পারেন ১০ হাজার জেলে
১ বছর আগে
শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় দুবলার চরে জড়ো হতে পারেন ১০ হাজার জেলে
শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার ১০ হাজার জেলে শুঁটকি পল্লী খ্যাত দুবলার চরে জড়ো হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতি বছর কয়েক হাজার জেলে ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মাছ ধরতে ও শুঁটকি তৈরি করতে এই অঞ্চলে ভিড় জমান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলেদের আবাসন ও শুঁটকি সংরক্ষণের জন্য ১০৮টি অস্থায়ী ঘর ও ৭৮টি ডিপো নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জেলেরা সুন্দরবনে ১ হাজার ৫০০টি ট্রলার ব্যবহার করে মাছ ধরবেন। তারা মাছগুলো প্রক্রিয়াজাত করবেন এবং শুকানোর জন্য সূর্যের নিচে রাখবেন।
কর্তৃপক্ষ জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়ার পর দুবলার চর ইতোমধ্যেই শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
গত বছর দুবলার চর থেকে সরকার ৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে এবং এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৮৮ জেলে আটক
দুবলার চরে লইট্যা, ফাইস্যা, কোরাল, রূপচাঁদা, বিভিন্ন প্রকার চিংড়ি, ছুরি, থুড়ে, কাইন, বাইন, লাক্ষ্যা, কঙ্কন, টুনা, স্যামনসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। রাসায়নিক দ্রব্য ও ফরমালিন ব্যবহার না করে প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় এই এলাকার শুঁটকির চাহিদা বেশি।
রামপাল উপজেলার জেলে রবিউল ইসলাম জানান, শুক্রবার তিনি দুবলার চরে এসে বাঁশ, পলিথিন ও হোগলা দিয়ে অস্থায়ী বাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটান।
মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শহীদ মল্লিক বলেন, ইতোমধ্যে হাজার হাজার জেলে ওই এলাকায় পৌঁছেছেন এবং অনেকেই মাছ ধরতে সাগরে গেছেন।
আলোরকোল পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার বলেন, জেলেরা অস্থায়ী ঘর নির্মাণে ব্যস্ত, যা শেষ হতে ২-৩ দিন সময় লাগে।
তিনি বলেন, কিছু জেলে খোলা আকাশের নীচে তাদের ধরা মাছ প্রক্রিয়াকরণে ব্যস্ত ছিলেন।
সুন্দরবন পূর্ব জোনের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব জানান, ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শুঁটকির মৌসুম চলবে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
জেলেরা ৫ মাস ধরে আলোরকোল, মাঝেরকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া ও শেলার চরে অবস্থান করবেন।
শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শেখ মাহবুব হাসান বলেন, দুবলার চরে জেলেদের ছদ্মবেশে কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য বন বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৫০ জেলে আটক
১ বছর আগে
খুলনায় দুই ভোল মাছ সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি!
সুন্দরবনের দুবলার চরে বৃহস্পতিবার রাতে ফারুক নামের এক জেলের জালে ধরা পড়েছে সাড়ে ৬৩ কেজির দুটি ভোল মাছ। সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় মাছ দুটি কিনেছেন মোংলার ব্যবসায়ী আল-আমিন।
এর মধ্যে একটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, আরেকটির ওজন ২৭ কেজি।
ভালো দামে বিক্রির জন্য প্রক্রিয়াজাতের পর ভোল মাছ দুটি চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ সময় মাছ দু’টি দেখতে ভিড় জমান উৎসুক লোকজন।
এ মাছের বিভিন্ন অংশ ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়ে বলেও দাম অনেক বেশি বলে জানান স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
তারা জানান, বিগত ১০ বছরেও এত বড় মাছ ওঠেনি মোংলার বাজারে। প্রায় বিলুপ্তির পথে এ ভোল প্রজাতির মাছ। তবে মাঝে মধ্যে দুবলার চরের দু-এক জেলের জালে ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করেছে সরকার
মোংলার মাছ বাজারের আড়তদার মেসার্স জয়মনি ফিশের মালিক আল-আমিন বলেন, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চরে জেলে ফারুক হোসেনের জালে বৃহস্পতিবার রাতে বড় দুটি ভোল মাছ ধরা পড়ে। এর মধ্যে বড়টির ওজন সাড়ে ৩৬ কেজি আর ছোটটির ওজন ২৭ কেজি। মাছ দুটি শুক্রবার সকালে দুবলার চরের আড়তে নিলামে বিক্রির জন্য ওঠানো হয়। এ সময় ২৫ ব্যবসায়ী অংশ নেন।
আল-আমিন আরও বলেন, নিলাম ডাকে সর্বোচ্চ দামে মাছ দুটি আমি কিনে নিই। বড়টি ১১ লাখ ও ছোটটি সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম পড়েছে। এরপর মাছ দুটি চর থেকে আমার মোংলার আড়তে নিয়ে আসি। বরফ ও পলিথিনে মুড়িয়ে শনিবার বিকালে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
মোংলা মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফারাজী বলেন, ভোল মাছ এই অঞ্চলে খুব কম পাওয়া যায়। পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদীতে আগে পাওয়া গেলেও এখন দুর্বৃত্তরা বিষ দিয়ে মাছ ধরায় পাওয়া যায় না। এ জন্য আমাদের আড়তেও আসে না। দুবলার চরে পাওয়া মাছ দুটি আড়তে এসেছে। সেগুলো চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আরও বেশি দাম পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, ভোল মাছের ফুলকি ও পটকার দাম প্রচুর। এই মাছের পটকা ও বালিশ রফতানি হয়। শুনেছি এসব দিয়ে মেডিসিন তৈরি করা হয়।
সামুদ্রিক ভোল মাছ খুবই দামি উল্লেখ করে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে এক ধরনের সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা বিদেশে ওপেন হার্ট সার্জারির কাজে লাগে। এছাড়া বিয়ার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: ২৮ কেজির ভোল মাছ বিক্রি হলো সাড়ে ৮ লাখ টাকায়!
ব্রহ্মপুত্র নদে বর্শিতে ধরা পড়লো ৬২ কেজির বাঘাইর মাছ!
১ বছর আগে
সুন্দরবনের আগুনঝরা নদীর বুকে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’, পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে
সুন্দরবনের দুবলার চর অভিমুখে আগুনঝরা নদীর মোহনায় জেগে উঠেছে একটি দ্বীপ। এই দ্বীপটি জেগেছে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে। বন বিভাগ দ্বীপটির নাম দিয়েছে ‘ত্রিকোণ দ্বীপ’।
সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদেরকে দ্বীপটি আকর্ষণ করবে। দ্বীপটি কেবলই কেওড়া গাছের বন। এটিতে পর্যটক নামার কোনও সুযোগ নেই। কারণ এখানে ঘন বন। জোয়ার ভাটায় পানি ওঠার কারণে চরের মাটি নরম ও কর্দমাক্ত।
জানা গেছে, ২২-২৫ বছর আগেও জাহাজ নিয়ে এ স্থান পার হওয়া ছিল ঝুঁকির। কারণ এ মোহনা ছিল প্রচণ্ড খরস্রোতা। দ্বীপের কারণে এখন স্থানটি ধীরে ধীরে অতিক্রম করতে হয়। বামের নদীটিই আগুনঝরা নদী। যা এখন ভরাট হয়ে কাঁদার স্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে আগুনঝরা নদী পার হওয়ার সময় এই দ্বীপটির নয়নাভিরাম দৃশ্য নজর কাড়বে পর্যটকদের।
সুন্দরবনে পর্যটকবাহী লঞ্চের সুকানি শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন সুন্দরবনের বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চালাচ্ছি। আগুনঝরা নদীর এই মোহনাটি ছিল বিশাল ও অত্যন্ত খরস্রোতা। ২০-২২ বছর হলো দ্বীপটি সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে এর এক পাশের নদী মরে যাচ্ছে। অপরপাশ এখনও সচল আছে। ক’দিন সচল থাকবে তা বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে পর্যটকের খরা, হতাশায় ট্যুর অপারেটররা
পর্যটক গোলাম হোসেন বলেন, দূর থেকে দেখলে দ্বীপটি ভালোই লাগে। যেন সুন্দরবনের মাঝে আরেক টুকরো সুন্দরবন। যত কাছাকাছি আসে ততই আকর্ষণ বাড়ে।
পর্যটক মোমিন মিয়া বলেন, দুবলার চর এলাকায় বিভিন্ন চরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এ দ্বীপটিও বেশ ভালো লাগে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘দ্বীপটি বেশ পুরানো। আগুনঝরা নদীর মোহনায় এ দ্বীপের কারণে নদীর দুটি ধারা সৃষ্টি হয়েছে। একটিতে নৌযান চলাচল করছে। অপরটি পলি জমে জমে ভরাট হয়ে উঠছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া খননের কোনও পরিকল্পনা নেই। ফলে ওই অংশটিও ভবিষ্যতে গাছপালায় ভরে জঙ্গলে পরিণত হতে পারে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে ১ সেপ্টেম্বর
১ বছর আগে
বঙ্গোপসাগর উত্তাল: নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছেন জেলেরা
চার দিন যেতে না যেতেই আবারও বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে সাগর, বন্দর চ্যানেল ও নদী উত্তাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে মোংলা বন্দরসহ উপকূলীয় এলাকায় গরমের তাপদাহ কমছে না। সাগর ও সুন্দরবন উপকূলের প্রচণ্ড বাতাস ও দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। এমন আবহাওয়ার মধ্যে সাগরে মাছ শিকারে নামতে পারছে না জেলেরা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার জানান, শুক্রবার রাত থেকে দুবলার চরে ঝড় হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাতও রয়েছে। শনিবার ভোর থেকে ঝড়-বৃষ্টি বাড়ছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা দুবলার চরে আশ্রয় নিয়েছেন। চরের ভেদাখালী খালে ৫৪টি ট্রলার নিরাপদে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, বৈরী আবহাওয়ায় সকাল থেকে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহনের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাছাড়া নিম্নচাপের প্রভাবে খুলনায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঝড়ো হওয়া বিদ্যমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: কক্সবাজারে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধাজ্ঞা
বন্দর সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন যাবত প্রচণ্ড তাপদাহে মোংলা বন্দরসহ উপকূলীয় এলাকার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গত ১৩ আগস্ট সাগরে নিম্নচাপ কমে গেলে এরপর তিন দিন প্রখর রোদে কাজ করতে বিপাকে পড়তে হয়েছে দিন মজুরদের। এখন আবার বৈরী অবহাওয়ায়ও দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মে।
বৈরী আবহাওয়া আর টানা বৃষ্টিতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে মোংলা সমুদ্র বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগপূর্ণ ও বৈরী আবহাওয়া শনিবার পার্যন্ত বিরাজ করছে। মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূল জুড়ে একাটানা ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
মোংলা বন্দর বার্থ শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, বৃষ্টিপাত হলে জাহাজের পণ্যের সুরক্ষায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জাহাজের ওপরের ঢাকনা খোলা থাকলে বৃষ্টিতে মালামালের ক্ষয়ক্ষতিসহ জাহাজের অভ্যন্তরে পানি জমে। তাই বৃষ্টির সময় কাজ বন্ধ থাকছে, কমলে আবার শুরু হচ্ছে, এভাবেই কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: ১১ জেলে নিখোঁজ, উদ্ধার ৮
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ওয়াদুদ তরফদার বলেন, আমরা আবহাওয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, বন্দরের কাজ কর্মও চলছে। আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ বছর আগে
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও দুই জেলের লাশ উদ্ধার
বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের দুবলার চরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরও দুই জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তল্লাশি টিমের সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় ওই দুই জেলের লাশ উদ্ধার করে।
এ নিয়ে চারদিনে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এখনও আটজন জেলে নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে চতুর্থ দিনের মতো তল্লাশি চলছে।
মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করা ওই দুই জেলের নাম পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ১১ জেলে
দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের পাশাপাশি জেলেরা প্রায় ৫০টি ট্রলার নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। শনিবার থেকে তারা ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরসহ দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের তাণ্ডবে দেড় শতাধিক জেলেকে নিয়ে ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় দেড়শত জেলে সাঁতরিয়ে এবং অন্য ট্রলারের সাহায্যে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও কমপক্ষে ১৪ জেলে নিখোঁজ থাকে। শনিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চারদিনে ছয় জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩ জেলে জীবিত উদ্ধার
২ বছর আগে
বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি: আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ১১ জেলে
বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরবনের দুবলার চরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমবার দুপুরে বঙ্গোপসাগর থেকে ওই জেলের ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হলো। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে তৃতীয় দিনের মতো তল্লাশি চলছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ১৮ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ৩ জেলে জীবিত উদ্ধার
এর আগে রবিবার বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে মামুন শেখ (৪০) ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার জানারপাড় গ্রামের আজিজুল খানের ছেলে ইসমাইল খানের (৩৬) লাশ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এর আগে হঠাৎ ঝড়ে বেশ কয়েকটি ট্রলার ডুবে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তিন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় আরও জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড, বন বিভাগ এবং স্থানীয় জেলেরা সোমবার সকাল ১০টা থেকে তৃতীয় দিনের মতো বঙ্গোপাসাগর এবং দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে। প্রায় তিন হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে। এখনও ১১ জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে আটকা পড়া ৭ জেলে উদ্ধার
২ বছর আগে
দুবলার চরের রাস উৎসবে যেতে ৫ নৌপথ
প্রতি বছরের মতো এবারও রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী সুন্দরবনের দুবলার চরে ‘রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্য স্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবে অংশ নিতে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি রুট নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এসব পথে তীর্থযাত্রী ও দর্শণার্থীদের জানমালের নিরাপত্তায় বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল নিয়োজিত থাকবে।
পাঁচটি রুটের মধ্যে বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে যাওয়া যাবে দুবলারচর। এছাড়া কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা অত:পর শিবসা নদী-মরজাত হয়েও দুবলার চরে যাওয়া যাবে। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর, ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়েও দুবলার চরে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কর্মকর্তা আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন, পূর্ণিমা পুণ্য স্নানে কেবল তিন দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোন তীর্থযাত্রীকে পূণ্য স্নান স্থলে যেতে দেয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াস রাখা হবে বলে জানান তিনি।
বন বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, তীর্থযাত্রীদের আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য দুবলার চরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না।
আরও পড়ুন: খুলনায় রুটি বিক্রেতা রিক্তা এখন ইউপি সদস্য
এছাড়াও প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রঙ দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, শব্দযন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যেকোনও অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র, হরিণ মারার ফাঁদ, কুড়াল, দড়ি বহন করা থেকে যাত্রীদের বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়,সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে টোকেন ও টিকিট নিজের সাথে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে কন্ট্রোল রুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করারও নির্দেশনা দিয়েছে বন বিভাগ।
৩ বছর আগে
সুন্দরবনের দুবলার চরে রবিবার থেকে রাস উৎসব শুরু
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সুন্দরবনের দুবলারচরে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা হচ্ছে না। তবে রবিবার থেকে সোমবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাসপূজা শুরু হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৩ বছর আগে