সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা দেশের ন্যায় আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি খুলনায়ও প্রথম ধাপের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। তার আগে টিকা পৌঁছাবে ৩১ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন: রাজধানীর ৫ হাসপাতালে টিকাদান
ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে টিকা প্রাপ্তদের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে টিকা পেতে অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
টিকাদান কার্যক্রম ও পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সমাধানের জন্য জেলা, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভীতি দূর করতে স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে কাউন্সিলিংসহ সমাবেশ করা হচ্ছে।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, খুলনার জন্য বরাদ্দকৃত টিকা ৩১ জানুয়ারি গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে খুলনা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদকে সভাপতি করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ ১৩ সদস্যের টিকা গ্রহণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভার প্রথম সদস্য হিসেবে পলকের টিকা গ্রহণ
টিকা সংরক্ষণে ৩০টি আইএলআর (হিমায়িত বাক্সের মধ্যে সংরক্ষণ) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর স্কুল হেলথ ক্লিনিকে ১৩টি ও নয়টি উপজেলায় ১৭টি আইএলআরে টিকা সংরক্ষণ করা হবে। প্রতিটিতে সাত হাজার করে টিকা রাখা যাবে। টিকা ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিতে সংরক্ষণাগারে বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুতের দুটি ফেজও যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড ভ্যাকসিন: সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী
নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রগুলো হলো- নগরীর সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতাল, তালতলা হাসপাতাল ও লাল হাসপাতাল। আর উপজেলা পর্যায়ে নিজ নিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ টিকা দেয়া হবে। প্রতিটি টিকাদানকারী টিমে দুজন টিকা প্রয়োগকারী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন। টিকা প্রদান কাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, খুলনা সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ নগরের টিকাদান কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সফল বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশনের মেয়রকে সভাপতি ও একই সংস্থার চিফ মেডিকেল অফিসারকে সদস্য সচিব করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু
এ জেলায় ৯৭ হাজার ২৩০ জন সম্মুখসারির জনগোষ্ঠীকে প্রথম ধাপে টিকা প্রদান করা হবে। পরে প্রতি মাসে করোনা টিকা পাওয়া যাবে। প্রথম পর্যায়ে অন্যদের পাশাপাশি খুলনায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে এই টিকা পাচ্ছেন ৫৪৭ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, ‘৩১ তারিখে প্রথম টিকার চালান আমাদের হাতে আসবে। দীর্ঘ ১০ মাস পরে টিকা আসছে, এটি অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ।’
‘টিকা দেয়ার পর টিকার স্থান ফুলে যাওয়া, হালকা জ্বর ভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই আমাদের জানাতে হবে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:করোনায় দেশে আরও ১৫ মৃত্যু, শনাক্ত ৫০৯
সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, ১৮ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, দুগ্ধবতী মা ও মুমূর্ষ রোগীরা টিকা নিতে পারবেন না। এছাড়া যারা টিকা নিতে ইচ্ছুক নয় তাদের টিকা দেয়া হবে না এবং টিকা পেতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে নানা রকমের ভয়ভীতি রয়েছে। এ জন্য উৎসাহ দিতে উপজেলা কমিটিসহ স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যেয়ে কাউন্সিলিং করছেন। তাছাড়া সমাবেশ করার পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’