খুলনার তেরখাদা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের আলোচিত শিশু তানিশা হত্যা মামলায় সৎ মা তিথী আক্তার মুক্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার আসামির উপস্থিততে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. এনামুল হক, তার সহযোগী হিসেবে এপিপি সেখ ইলিয়াস হোসেন ও মোসা. শাম্মি আক্তার। সাত কার্যদিবসে মামলাটির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
আদালত জানায়, তানিশা আড়কান্দি গ্রামের আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মো. খাজা শেখের মেয়ে। খাজা শেখের পোস্টিং ছিল বান্দরবন। আগের স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর খাজা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ফকিরহাট উপজেলার আট্রাকি গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলী শেখের মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোবাইলে আসক্ত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে ইমো ও ম্যাসেঞ্জারে কথা বলতো। এ নিয়ে খাজা স্ত্রীকে সন্দেহ করে। তানিশা মুক্তার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতো। ওই বছর ২ এপ্রিল ম্যাসেঞ্জারে ফারাবি প্রসেনজিত নামে এক ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব ও কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাধে। একপর্যায়ে খাজা স্ত্রীকে তালাক দেয়াসহ বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। খাজার ওপর প্রতিশোধ নিতে তানিশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মুক্তা।
৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হত্যার উদ্দেশে দরজা বন্ধ করে ঘুমন্ত তানিশার ওপর আক্রমণ করেন। দা দিয়ে ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত করতে থাকেন। ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে তানিশার দাদি দরজা খুলতে বলেন। কিন্তু মুক্তা দরজা খোলেননি। পরে তানিশার চাচা রাজু শেখ বাড়ি এসে দরজা খুলতে বললে মুক্তা বাইরে বের হন। ঘরে ঢুকে তানিশার নিথর দেহ খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে ফরিদপুরে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, দেবরের যাবজ্জীবন
ভুক্তভোগীর দাদা মো. আবুল বাশার শেখ এ ঘটনায় তেরখাদা থানায় মুক্তাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই বছর ৩১ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শফিকুল ইসলাম মুক্তাকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।