প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য গণপরিবহন যাদের একমাত্র ভরসা, তারা আজ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে খাতটির মালিক-শ্রমিকেরা।
শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীতে কোনো বাস চলতে দেখা যায়নি। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না দূরপাল্লার কোনো পরিবহনও।
নাটোর থেকে ইউএনবি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার সড়কে জনসাধারণ ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘটকারী শ্রমিকরা সকাল থেকে সব গণপরিবহন টার্মিনাল ঘেরাও করে রেখেছে। তারা জনগণকে শুধুমাত্র সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ব্যবহার করতে বাধ্য করেছে। যাত্রীদের অভিযোগ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিএনজি ও অটোরিকশার চালকেরা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছেন।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সকাল থেকে নগরীর শশানগাছা, চকবাজার, জাঙ্গালিয়াসহ ২৬টি টার্মিনাল থেকে কোনও বাস ছেড়ে যায়নি। চাকরি প্রত্যাশীরা পরীক্ষা দিতে তাদের গন্তব্যে যেতে বিকল্প পরিবহন না পেয়ে মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়েও অনেকে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি।
আরও পড়ুন:নথি চুরির ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, ট্যাঙ্ক লরি এবং প্রাইম মুভার্স মালিক ও শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক মো. রুস্তম আলী অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার অযৌক্তিকভাবে গত ২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু সেতু ও মুক্তারপুর সেতুর টোল ২৫৮% থেকে বাড়িয়ে ৩০০% করেছে। এরপর আবার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছরে দীর্ঘ সময়ের জন্য গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এখন যখন পরিবহন মালিকরা করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন, সরকার তখন সেতুর টোল এবং জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার অথবা ভাড়া বাড়ানো না হলে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে বাস এবং পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, বুধবার সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) লিটার প্রতি ১৩ দশমিক ০১ টাকা কম দামে ডিজেল এবং ৬ দশমিক ২১ টাকায় ফার্নেস অয়েল বিক্রি করায়, প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। প্রতি লিটারের বিক্রয়মূল্য, তাদের আমদানি করা দামের চেয়ে কম। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলিয়ামের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পেট্রোলিয়ামের দাম পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ’
আরও পড়ুন:গাজীপুরে বাস উল্টে নিহত ২
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ফাইল গায়েব’: তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন