সোমবার দিবাগত রাতে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়লে নিজ টিনসেড ঘরের চালের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সে আত্মহত্যা করে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার দুপর সাড়ে ১২টার দিকে হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহত ওই গৃহবধূ হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মেখল এলাকার মোজ্জাফফরপুর গ্রামের রশিক ডাক্তার বাড়ির অরুন কুমার শর্মার স্ত্রী বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে নিহত রুপনার সাথে অরুন কুমার শর্মার সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১৯ ও ১৪ বছরের দুই মেয়ে এবং ৭ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। অরুন শর্মা স্থানীয় সেলুনে চুল কাটার কাজ করে।
নিহত গৃহবধূ রুপনা স্বামীর আয়ের টাকা দিয়ে সংসার চালাতে না পারায় পারিবারিক প্রয়োজনে গত কয়েকবছরে আশা, গ্রামীন, মুক্তিপথ, ঘাসফুল, সাজেদা, ব্রাক ও প্রত্যাশাসহ মোট ৭টি এনজিও এবং বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকা ঋণ করে।
এতদিন কষ্টেসৃষ্টে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে আসলেও সাম্প্রতিক করোনা মহামারির কারণে স্বামীর নিয়মিত কাজ না থাকায় সঠিক সময়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশের কারণে কিস্তি আদায় করা না হলেও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এনজিওগুলো নিয়মিত ঋণের কিস্তির জন্য চাপ দিতে থাকে। নিয়মিত এত বিপুল পরিমান ঋণের কিস্তির টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হওয়ায় মানষিক চাপে রুপনা আত্মহত্যা করেছে বলে তার স্বামী অরুন শর্মা জানান।
নিহতের বড় মেয়ে এইসএসসি পরিক্ষার্থী ১৯ বছর বয়সী জবা শর্মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মা ঋণের কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারার কারণে গলায় ফাঁস নেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কাইয়ুম মেম্বার হাটহাজারী থানা পুলিশকে খবর দিলে হাটহাজারী মডেল থানার এস আই মুজাহিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। তিনি প্রাথমিক সুরতহাল পর্যালোচনায় এটি আত্মহত্যার ঘটনা হয়ে থাকতে পারে বলে সাংবাদিকদের জানান।