শনিবার রাতে নগরীর বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমির মৃত্যু হয়।
সুমি বৈদ্য খুলশী থানাধীন ফয়’স লেক বৈশাখী ভবনের সুনিল বৈদ্যের মেয়ে এবং নগরীর এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্প্রতি এইএসসি পাশ করেছেন।
এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তার ছোট ভাই অরুপ বৈদ্য (১৬) হাসপাতালে ভর্তি আছে।
এদিকে সন্ধ্যায় সুমি ও অরুপের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর সন্ধ্যায় নগরীর বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নেন স্বাস্থ্য দপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘মূলত ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হওয়ায় সুমির শরীরে রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। তাদের দুজনের খবর শুনে আমরা দেখে এসেছি। এর কিছুক্ষণ পরেই সুমির মৃত্যু হয়। যতটুকু শুনেছি, সুমির ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর তার বাবার ফার্মেসির দোকান থাকায় নিজে নিজেই চিকিৎসা করেছিলেন। এ বিষয়ে অবহেলা না করে যদি প্রথমেই চিকিৎসা করাতো হয়তো সুমি বেঁচে যেতেন। তবে চমেক হাসপাতালে গিয়ে সুমির ছোট ভাই অরুপকে দেখে এসেছি। সে বর্তমানে কিছুটা ভালো আছে। আশা করছি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’
অক্টোবরের শুরুতে তিনশ’র নিচে নেমে এসেছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৯ নতুন রোগী।
এর মধ্যে ঢাকায় ৬০ জন এবং বাকি ২০৯ জন দেশের অন্যান্য এলাকায় ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।
সরকারি তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৯ হাজার ৬১৬ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন ৮৭ হাজার ৯০৩ জন। অর্থাৎ সারাদেশে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৯৮ শতাংশ।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এ বছর এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। তবে গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া শুরু হয় এবং বর্তমানে কমে আসছে নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগে ভর্তি রোগী আছেন ১ হাজার ৪৭৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৯৫ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৩৬টি মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে সংস্থাটি এ পর্যন্ত ১৩৬টি ঘটনার পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ৮১টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।