গ্রেপ্তার রূপন দে (২০) পটিয়া উপজেলার কেলিশহর দারোগাহাট গ্রামের সুধীর দে’র ছেলে। নগরীর মাদারবাড়ি এলাকার একটি খাবার হোটেলে চাকরি করেন তিনি।
নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকা থেকে রবিবার রাতে রূপনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি সোমবার সকালে নিশ্চিত করে পুলিশ।
কম্বল দেয়ার কথা বলে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন জানান, গত শুক্রবার রূপন বলুয়ার দিঘী এলাকায় খালার বাসায় বেড়াতে যান। এ সময় তার খালা বাসায় ছিল না এবং খালু অন্য কক্ষে ঘুম ছিলেন। এ সুযোগে রূপন তার খালাতো বোনকে ধর্ষণ করেন।
শিশুটির মা পরে বাসায় এসে রক্তক্ষরণের বিষয়টি টের পেয়ে কারণ জানতে চাইলে শিশুটি মাকে ঘটনা জানায়।
নারায়ণগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণের দায়ে মুয়াজ্জিন গ্রেপ্তার
ভুক্তভোগী ওই শিশুকে শনিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় তার মা-বাবা। পরে শিশুটির বাবা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
ওসি মহসিন জানান, মামলার পরপর কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযান শুরু করে। নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় আত্মগোপন করে ছিলেন রূপন। রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চলন্ত বাসে ধর্ষণ চেষ্টা: সহকারীর পর এবার বাস চালক গ্রেপ্তার
পুরো দেশের চিত্র
দেশে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনায় ৯৭ শতাংশ অপরাধীই বিভিন্ন উপায়ে মুক্তি পেয়ে যান।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, সদস্য সমাপ্ত ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৭৫ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০৮ জনকে গণধর্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ধর্ষণের পরে ৪৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং অন্য ১২ জন আত্মহত্যা করেছে।
এছাড়াও, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনটি বলছে যে ১৬১ জন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন।
২০২০ সালে মাগুরায় ৭৩টি ধর্ষণের ঘটনা
আসক আরও বলছে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় তিনজন নারী ও নয়জন পুরুষকে হত্যা করা হয়। এছাড়া ৬২৭টি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ২০ জন ছেলেকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে এবং ২১ জন নারী অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গত ১৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এখন ওই ধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার তরুণীকে বিয়ে করে জামিন পেলেন আসামি
এর আগে, দেশে সম্প্রতি ধর্ষণের ক্রমবর্ধমান ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদের অধিবেশন না থাকায় গত ১৩ অক্টোবর ঘৃণ্য এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনের (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন) একটি সংশোধনী প্রস্তাব অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছিল।
বিশেষ করে সিলেট এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবির মধ্যেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছিল।