প্রাণ বাঁচাতে যমুনা নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর মালয়েশিয়া প্রবাসী আল আমিন মণ্ডলের (২৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের রাখালগাছি খেয়াঘাটের কাছে বড়শিতে আটকে গেলে লাশটি টেনে তোলা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তা উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
নিহত আল আমিন পাবনার আমিনপুর থানার সিদ্দিকনগর রামনারায়ণপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে। মালয়েশিয়া থেকে চার মাস আগে তিনি দেশে ফেরেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ নিতে পুলিশকে কল স্বামীর
স্থানীয়রা জানান, প্রায় সাত বছর পর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন আল আমিন। ১৫-১৬ দিন আগে শাহ আলীসহ কয়েকজন চা খাওয়ার জন্য আল আমিনের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এর জের ধরেই তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর গতকাল (শুক্রবার) বিকালে তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। সে সময় প্রাণ বাঁচাতে তিনি যমুনা নদীতে ঝাঁপ দেন।
আল আমিনের পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার ঢালারচর গ্রামে মেয়ে দেখতে যান আল আমিন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার মামা, বোন ও তার স্বামী। মাঝে বোনের স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে তিনি রাখালগাছি বাজার যান। এর কিছুক্ষণ পর পাবনার আমিনপুর থানার কোমরপুর গ্রামের শাহ আলী (৩০), রবিউল ইসলামসহ (৩৫) আরও ৭-৮ জন চারটি মোটরসাইকেলে চড়ে রাখালগাছি গিয়ে তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। পরে প্রাণে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন আল আমিন।
দেবগ্রাম ইউপির রাখালগাছি ১ নম্বর ওয়ার্ড সাবেক ইউপি সদস্য আবু বক্কার জানান, মারধর ও ছুরিকাঘাত থেকে বাঁচতে বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন আল আমিন। আমিনপুর ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তার খোঁজ করেও ব্যর্থ হয়।
এরপর আজ (শনিবার) সকাল থেকে ফের অনুসন্ধান শুরু হলে দুপুরে রাখালগাছি খেয়াঘাটের কাছে বড়শিতে আটকে যায় তার লাশ। প্রথমে সেটিকে বড় মাছ বা অমন কিছু ভেবে টেনে তোলার পর সেটি আল আমিনের লাশ হিসেবে শনাক্ত হয়। লাশটি ডাঙায় তোলার পর তার কপালের বাঁ পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় বলে জানান আবু বক্কার।
আরও পড়ুন: হাসপাতালের টয়লেট থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়া প্রবাসী আল আমিনের কাছে স্থানীয় শাহ আলীসহ কয়েকজন এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় শুক্রবার বিকালে রাখালগাছি থেকে তাকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়।’
ওসি আরও বলেন, ‘আজ দুপুর ১টার দিকে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের বাঁ চোখের নিচে অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’