চট্টগ্রাম, ৫ জুলাই (ইউএনবি)- লকডাউন চলাকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে রোগী দেখতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক চিকিৎসককে জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম।
জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়া একজন চিকিৎসককে জরিমানা করায় ওই ইউএনও-কে প্রত্যাহার করা হয়। তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
রবিবার এক আদেশে তাকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কেএম আল-আমীন এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: লকডাউন ‘কেমন চলছে’ দেখতে বেরিয়ে চট্টগ্রামে আটক ২১
এর আগে গত শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারে যাওয়ার পথে ফরহাদ কবির নামে ওই চিকিৎসককে সাতকানিয়া পৌরসভার কলেজ রোড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও নজরুল ইসলাম। ওই সময় তিনি চিকিৎসককে জরিমানার সঙ্গে জেল দেওয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ১৫ হাজার ছাড়াল, একদিনে সর্বোচ্চ ১৫৩
ওই চিকিৎসক নিজের ফেসবুকে পোস্টে লিখেন, ‘ধন্যবাদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার! লকডাউন অমান্য করে রুগি দেখতে চেম্বারে যাওয়ায় এক হাজার টাকা জরিমানা সাথে ছবি তুলে নিয়েছে পত্রিকায় দেয়ার জন্য!
নোটঃ আমার হেলমেট ছিল না বাইক চালানোর সময়।’
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি পৌরসভার নাছির ফার্মেসি এবং মক্কা ফার্মেসিতে নিয়মিত চেম্বার করি। ঘটনার দিন আমি চেম্বার শেষ করে ফিরছিলাম। ওই সময় একজন ইমার্জেন্সি রোগী আসার বিষয়ে ফোন পেয়ে মাঝপথ থেকে আবার চেম্বারে যাচ্ছিলাম। তখন সাতকানিয়া পৌরসভার কলেজ রোডের মুখে ইউএনও’র সঙ্গে দেখা হয়।’
এ সময় ইউএনওর সঙ্গে থাকা লোকজন সিগন্যাল দিলে আমি মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার পরিচয় দেই।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: ২৪ ঘণ্টায় ৩১ নতুন রোগী হাসাপাতালে
ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পর ইউএনও কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আপনারা লকডাউন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। আমরা লকডাউন সফল করতে পারি না বলে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আর এখন আপনারা লকডাউন মানছেন না।’
এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশ হলে চিকিৎসক হয়রানির অভিযোগে বিএমএর নেতারা সিভিল সার্জনের হস্তক্ষেপের দাবি করেন। পরে সাতকানিয়ার ইউএনও নজরুল ইসলামকে ওএসডি করা হয়।
এই বিষয়ে কথা বলতে সাতকানিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘উনার মুখে মাস্ক ছিল না, মাথায় হেলমেট ছিল না। তাছাড়া তিনি নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তার কোন পরিচয় পত্র দেখাতে পারেননি। তাই ওনাকে আইন মোতাবেক জরিমানা করা হয়েছে। চিকিৎসক নেতারা অভিযোগ করেছে আমি দুর্ব্যবহার করেছি। অথচ কোন প্রকার দুর্ব্যবহার করা হয়নি।’