রাঙ্গামাটির বিএফডিসির অবতরণ ঘাটে কর্ম তৎপরতা শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। খুলে দেয়া হয়েছে শহরের সকল বরফ কল।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম. তৌহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ভোর ৫টায় রাঙ্গামাটি বিএফডিসির অবতরণ ঘাটে প্রথম মাছের চালান এসেছে। একইভাবে কাপ্তাইসহ অন্যান্য অবতরণ ঘাটে মাছের চালান আসতে শুরু করেছে।
তিনি জানান, রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বিস্তারের কারণে এবার বাম্পার আহরণ সম্ভব হবে। তবে এর জন্য বিএফডিসির সকল কর্মকর্তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। বন্ধকালীন (মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা) সময় অবৈধ মাছ নিধনসহ পোনা মাছের রক্ষণাবেক্ষণে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয় তাদের। এ সময়ে হ্রদের মৎস্য সম্পদ তদারকি করার জন্য ৬টি মোবাইল মনিটরিং সেন্টার ও ৭টি চেকপোস্ট বসানো হয়। যার সুফল এখন মৎস্যজীবীরা ভোগ করবেন।
রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদে ৬৬টি দেশীয় প্রজাতির ও ৬টি বহিরাগত প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। প্রতি বছর রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ মেট্টিক টন মাছ আহরিত হয়। যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ধরে রাখতে বিএফডিসি বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মৎস্য ব্যবসায়ী উদয়ন বড়ুয়া বলেন, দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবারও ব্যবসা চালু হওয়ায় আমরা দারুণ খুশি। কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরার সাথে প্রায় ২২ হাজার জেলে নির্ভর করেন। তাদের আয়ের একমাত্র পথ মাছ শিকার। এটি আবারও চালু হওয়ায় সবাই আনন্দিত।
উল্লেখ্য, দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণসহ কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের এক আদেশে গত ৩০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে হ্রদের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়। এ মাছ শিকার বন্ধকালীন সময়ে হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের পাশাপাশি মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় নার্সারি থেকে ৩০ টন মাছের পোনা ছাড়া হয় কাপ্তাই হ্রদ।