নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়ায় শনিবারের সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হওয়ার পর রবিবার একই স্থানে বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়েছে দুই মোটরসাইকেল আরোহী।
আহতরা হলেন-বিপ্লব (২২) ও শুভ (২০)। তাদের বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী এলাকায় বলে জানিয়েছে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।
এদিকে সাতজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর একই দিনে নাটোরে সড়কে ঝরেছে আরও দু'টি প্রাণ। ঈদের ছুটি শেষে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা শিবপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে কর্মস্থল পাবনায় যাচ্ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ। শনিবার রাত ৮টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর টেকনিকেল কলেজের সামনে ট্রাক চাপায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যূ হয় শামীমের।
আরও পড়ুন: নাটোরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯
খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নাটোর-ঢাকা মহাসড়কে পড়ে থাকা শামীমের রক্তাক্ত লাশ ও মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পাওয়ার পরই তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাকে কোন গাড়ি চাপা দিয়ে গেছে তা শনাক্ত করা যায়নি বলে জানান ওসি।
সেদিন সকালেই মাত্র ৫ কিলোমিটারের মধ্যে দুই বাসের সংঘর্ষে প্রাণ হারায় নারী শিশুসহ সাতজন।
এর মধ্যে মায়ের সামনে মৃত্যু হয় একমাত্র পুত্র কাউসার ও মেয়ে সাদিয়ার। মৃত্যূ হয় নাটোরের নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মশিউর রহমানের। মারা যান নাটোরের লালপুর উপজেলার মোহনা আক্তার মিলি, সদরের আলমগীর এবং টাঙ্গাইলের আব্দুল জলিল ও মাগুড়ার মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: নাটোরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭
মর্মান্তিক এ মৃত্যুর ৯ ঘন্টার ব্যবধানে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে ঝরে যায় ব্র্যাক কর্মকর্তা শামীমের জীবন। আবার শামীমের মৃত্যুর ঘন্টা খানেক আগে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কে নাটোর সদর উপজেলার তোকিয়া এলাকায় ট্রাক উল্টে মৃত্যূ হয় আল আমিন নামে এক কৃষি শ্রমিকের।
পবা হাইওয়ে থানার ওসি মোফাখ্খারুল ইসলাম জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় নাটোরের সিংড়ার উপজেলার চৌগ্রাম থেকে ২৫ কৃষি শ্রমিক ধান কেটে মজুরি হিসাবে পাওয়া ধান নিয়ে ট্রাক যোগে নিজ জেলা চাপাই নবাবগঞ্জ ফিরছিল। পথে নাটোর জেলার শেষ সীমানায় তোকিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটি রাস্তার পাশের খাদে উল্টে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা কম-বেশি আহত অবস্থায় ২৪ জনকে উদ্ধার করে। নিখোঁজ থাকে আল আমিন। পরে ট্রাক সরিয়ে তার নিচ থেকে বের করা হয় তার লাশ। মহাসড়ক গুলোতে দ্রুত গতির ভারি যানবাহনের পাশাপাশি অতিমাত্রায় মোটরসাইকেলের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন বগুড়া জোনের হাইওয়ে পুলিশের এসপি মুনসী শাহাবুদ্দিন।