এর আগে সোমবার দিনভর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে ড্রেন, সেফটিক ট্যাংকেসহ কারাগারের সর্বত্র তল্লাশি চালানো হয়।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনার কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) ছগীর মিয়া জানান, কারাবন্দী রুবেল গত ৬ মার্চ ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে কারাগার থেকে পালিয়েছে। কারা অভ্যন্তরে দক্ষিণ পাশে সীমানা লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার গেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: এক বছর পর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাৎ
ছগীর মিয়া জানান, অন্যান্য বন্দীদের সাথে তাকে রাখা হয়েছিল কর্ণফুলী ভবনের (১৫ নম্বর পানিশমেন্ট ওয়ার্ডের) ছয় তলায়। তিনি যে বন্দী কারাগারের অভ্যন্তরে অপরাধমূলক কাজ করে তাদের ২৬ ঘণ্টার জন্য সেখানে রাখা হয়।
তিনি জানান, সিসিটিভিতে দেখা গেছে, গত ৬ মার্চ ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের ৫ তলার ১৫ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন। সেখান থেকে বের হয়ে বাইরের পানির ট্যাংক থেকে হাত মুখ ধুয়ে নেন। এরপর ওই ভবন থেকে নিচে নেমে সাঙ্গু ভবনের পাশে অবস্থিত ফাঁসির মঞ্চের দিকে চলে যান। এরপর থেকে তার আর উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে না সিসি ক্যামেরায়। তাই তদন্ত কমিটির ধারণা, ফাঁসির মঞ্চের পাশ দিয়ে কারাগারের উঁচু দেয়াল টপকেই হাজতি রুবেল পালিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: কারাবন্দীদের আত্মসংশোধনে ঢাবি অধ্যাপকদের চেষ্টা
এদিকে, সোমবার সকালের দিকে তদন্ত দল কারাগারে যান। এরপর তদন্ত টিম ডিআইজি প্রিজন কার্যালয়ে যান। পরে কারাগারের অভ্যন্তরে তারা প্রবেশ করেন। সমন্বিতভাবে সব কিছু মাথায় রেখে তদন্ত কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান।
সেই সাথে রুবেল কারাগারের অভ্যন্তরে কোথাও আছে নাকি বের হয়ে গেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে ফায়ার সার্ভিস দিয়ে ম্যানহোলসহ বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালায়। সকাল ১০টা থেকে শুরু করে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান চালানো হয়।
এর আগে নিখোঁজের ঘটনায় খুলনার বিভাগের ডিআইজি প্রিজন ছগীর মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার জেল সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলার ফোরকান ওয়াহিদকে সদস্যও করা হয়। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
গত শনিবার কারাগার থেকে বন্দী ফরহাদ হোসেন রুবেল নিখোঁজ হন বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। ওই দিন নগরীর কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়।
আরও পড়ুন: খালেদার কারাবন্দী জীবনের তিন বছর: প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
পলাতক আসামি রুবেল সদরঘাট থানার এসআরবি রেল গেট এলাকায় ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে বুকে ছুরিকাঘাত করেন। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবুল কালাম হাসপাতালে মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হত্যার অভিযোগে ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। ওই মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।