করোনাকালীন সময়ে সকল ধরনের পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য ও পার্সেল মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে সবজি ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে।
সোমবার পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই সবজি ট্রেনের উদ্বোধন করেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন ও সবজি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পটিয়া-দোহাজারি রেলপথের নব দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হলো: মন্ত্রী
পঞ্চগড়ে উৎপাদিত শসা, টমেটো, বেগুন, মরিচ, লাউ, সিম, মিস্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়। প্রথম দিনেই পঞ্চগড়ের চারজন ব্যবসায়ী শসা, টমেটো, বেগুন ও শুকনো মরিচসহ তিন মেট্রিক টন সবজি পাঠান।
আরও পড়ুন: প্রতিটি জেলায় রেল লাইন করা হচ্ছে: মন্ত্রী
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে সোমবার থেকেই একটি পার্সেল ট্রেন সপ্তাহে শনিবার, সোমবার, বুধবার পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম-ঢাকা রুটে চলবে। ছাড়বে দুপুর ১টায়, ঢাকা পৌঁছাবে ভোর ৩টায়। সপ্তাহে রবিবার, মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রুটে ১টি পার্সেল ট্রেন চলবে। ঢাকা ছাড়বে সকাল ৬টায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে। বিশেষ পার্সেল ট্রেনে কৃষিজাত পণ্য যেমন, শাক-সবজি, দেশীয় ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যাদি পরিবহনের ক্ষেত্রে মূল ভাড়ার উপর ২৫% রেয়তী ও অন্যান্য সকল প্রকার চার্জ রহিত থাকবে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে ৮টি বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলবে: রেলপথ মন্ত্রী
রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ জানান, করোনার মধ্যে জীবন এবং জীবিকা চালু রাখতে এবং লকডাউনে কৃষক যাতে কৃষি পণ্য সহজে পরিবহন করতে পারে সে জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ পার্সেল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেলওয়ে অতীতে বিভিন্ন সময় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন, ক্যাটল ট্রেনসহ পার্শ্বেল ট্রেন পরিচালনা করেছে। রেলওয়ে বর্তমানে তেল,সারসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করছে। কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে সারা দেশে আটটি পার্সেল ট্রেন চলাচল করছে। প্রতিটিতে ৪০ মেট্রিক টন সবজি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি ওয়াগন সংযুক্ত থাকছে। পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ট্রেনে ঈশ্বরদী স্টেশনে সংযোজন/বিয়োজন করতে পারবে। পণ্য যেকোন স্টেশনে নামানো এবং উঠানো যাবে।
পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার পানিমাছ পুকুরী এলাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম ও বদরুজ্জামান বাবু জানান, প্রথম দফা পণ্য রেলে পাঠানো হলো, কেমন খরচ হয় হিসেব নিকেশ করতে হবে। লাভ হলে রেলে পণ্য পাঠাবো না হলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
পঞ্চগড় রেলওয়ে ষ্টেশন মাস্টার মাসুদ পারভেজ জানান, পার্সেল এই ট্রেনটি যে কোনো স্টেশনে পণ্য লোড এবং আনলোড (উঠানামা) করা যাবে। মালামালের সাথে ব্যবসায়ীরাও যেতে পারবে।