তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে পঞ্চগড় থেকে ভারতের শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন সেবা চালুর প্রক্রিয়া চলছে। ভারতের সাথে আমাদের আলোচনা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাবান্ধার সাথে ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যও সম্প্রসারিত হবে।’
বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস আন্তনগর ট্রেনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নূরুল ইসলাম বলেন, একসময় ভারত-পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের অভিন্ন রেলপথ চালু ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রেলপথকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেলপথকে আধুনিকীকরণসহ নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে রেল ব্যবস্থাকে জনগণের দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতে জেলায় জেলায় রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন, যাতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয়।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস আন্তনগর ট্রেনের মাধ্যমে পঞ্চগড় থেকে রাজশাহী সরাসরি ট্রেন সেবা চালু করা হলো। যোগাযোগের যে ঘাটতি ছিল তা পূরণ হলো।’
রেলপথমন্ত্রী বলেন, ‘জেলায় জেলায় রেললাইন যাবে। এ জন্য সরকার ও রেল মন্ত্রণালয় কাজ করছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া রেললাইন পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে। আশা করছি আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী ট্রেন চলাচল দুদেশের প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।’
জনবলের অভাবে দেশে এখন পর্যন্ত ১০৭টি রেলস্টেশন বন্ধ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, (আগের সরকারগুলোর আমলে) জনগণের জন্য রেলের বগি ও ইঞ্জিন কেনা হয়নি, সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলির রেলবগি ও ইঞ্জিন তৈরির কারখানার সক্ষমতা হারিয়ে গেছে। রেল ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, খুলনা পর্যন্ত রেললাইন আছে। কিন্তু মোংলা বন্দর পর্যন্ত নেই। এ লাইন আগামী ২০২২ সালের মধ্যে মোংলা বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, যমুনা সেতুতে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ কাজ আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। ঢাকা-যশোর পথে ১৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে এটার কাজ শেষ হবে।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট প্রমুখ এ সময় বক্তব্য দেন।