নিজেদের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেয়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর সাত কিশোরী। করোনাকালীন সময়ে নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই ঠেকানোয় সাহসী এই সাত কিশোরীকে সম্মাননা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে জাতীয় যুব দিবসের একটি অনুষ্ঠানে মেয়ে শিশুদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এ সম্মাননাসহ শিক্ষা উপকরণ, নগদ অর্থ ও মনীষীদের বই উপহার দেয়া হয়।
উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য জাকিয়া সুলতানা বুবলীর অর্থায়নে এবং সিডা ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতায়, আরডিআরএস বাংলাদেশ বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি) প্রজেক্টের সার্বিক সহযোগিতা করে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা
সম্মানপ্রাপ্ত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী খাতুন, উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের হাউসেরহাট গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে। বাবা পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক। অল্প বয়সে বিয়ে করার মোটেও ইচ্ছে নেই তার।
স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু দারিদ্রতা তাদের প্রতিকূল অবস্থানে থাকায় তার সে স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক সময় বাবা মায়ের বাধ্যবাধকতায় বিয়েও ঠিক হয় তার। পাত্রপক্ষও সেজেগুজে চলে আসেন বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে। কিন্তু অনড় জান্নাতী। এত কম বয়সে কোনোমতেই বিয়ে করবে না সে। বিয়ের পিড়িতে বসে বধূ সেজে নিজেকে সাময়িক রঙিন করার থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে জীবনকে রঙিন করতে চায় এ কিশোরী।
এমন স্বপ্ন জান্নাতীসহ আরও ৬ কিশোরীর। তারাও ঠেকিয়েছে নিজের বাল্যবিয়ে। এদের কেউ দশম শ্রেণিতে কেউ নবম শ্রেণিতে, আবার কেউ দেবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে কারোরই ইচ্ছে নেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার। তাদের প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠত হতে চায় নিজ নিজ যোগ্যতায়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা বেগম, যুব উন্নয়ন অফিসার মনজুর আলম, বিবিএফজি প্রজেক্টের উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জাকিয়া সুলতানা বুবলী বলেন, যাতে কিশোরী মেয়েরা পরিবারে, সমাজে ও প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষিত থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে উৎসাহী হয় সেদিকটা বিবেচনা করে তাদেরকে এ উপহার দেয়া হয়েছে।