মৃত গৃহবধূ সামছুন নাহারের (১৯) পরিবারের দাবি এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও অভিযুক্ত চরফ্যাসনের চরকলমীর আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ফজলু সর্দারের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেয়া হয়নি।
ওই ঘটনায় মা ও তার গর্ভের সন্তান হত্যার বিচার দাবিতে শুক্রবার বেলা ১২টায় ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহতের মা খাদিজা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছরের ১৪ অক্টোবর দেড় লাখ টাকা মোহরনায় সাদ্দাম হোসেনের সাথে আব্দুল বাছেদের ১৮ বছর বয়সী কন্যা সামছুন নাহারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কারের জন্য নগদ ৭৫ হাজার টাকা ও ৬৩ হাজার টাকার সাংসারিক মালামাল কিনে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস না যেতে দুই লাখ টাকা যৌতুক দেয়ার জন্য চাপ দেয় তার স্বামী সাদ্দাম। টাকা না দেয়ায় তাকে মারধর ও অত্যাচার করে। এ বছরের ৩০ মে এমন নির্যাতনের খবর পেয়ে মা ও ভাই মো. নজরুল ইসলাম গিয়ে আহত অবস্থায় সামছুন নাহারকে উদ্ধার করে দ্রুত চরফ্যাসনে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওই সময় হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, সামছুন নাহারের গর্ভের বাচ্চাটি মারা গেছে। এ ব্যাপারে তখন থানার ওসির কাছে অভিযোগে দেয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি জানান তারা।
পরিবারটি জানায়, এর কয়েকদিন পরে সামছুন নাহারের স্বামী সাদ্দামের পিতা কয়েকজনকে নিয়ে তাদের পুত্রবধূর বাপের বাড়ি গিয়ে গর্ভের বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে গৃহবধূ সামছুন নাহারকে তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। এক মাস না যেতেই ফের সাদ্দাম দুই লাখ টাকার জন্য সামছুন নাহারকে চাপ দেয়। সামছুন নাহার টাকার জন্য তার মাকে জানান। পরে গরু বিক্রি করে টাকা দিবে বলে জানান। ৪ জুলাই রাতেই সাছুন নাহারের ওপর ফের নির্যাতন করা হয়। পরদিন খবর পেয়ে তারা থানায় গিয়ে লাশ দেখেন। নিহতের গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেন। পরে দুলারহাট থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে ওসি তাদেরকে থানা থেকে বের করে দেন।
তাদের দাবি, সামছুন নাহারকে যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী সাদ্দাম হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে ৪ জুলাই রাতে হত্যা করে।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো মজিবুর রহমান ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে এর বিচার দাবি করেন।
এদিকে, দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান, তারা সামছুন নাহারের গলায় ফাঁস দেয়া লাশ উদ্ধার করেন। তাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দিতে আসেননি। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
এছাড়াও ওই নারীর কোথাও আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।