বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ শুক্রবার ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সার্বজনীন উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে।
সকাল ৯টায় ঢাবি উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উদযাপন শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে র্যালিটি বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় অংশ নেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
ভিসি বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ আশা ও সাফল্যের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এটি ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকায়ও রয়েছে। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘শোভাযাত্রা বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এখন এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও।’
তিনি বলেন, ‘এটি বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য একটি মহান সম্পদ। এটি বজায় রাখা, সংরক্ষণ করা এবং সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। এবং এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দর্শনকে প্রতিফলিত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি সব ধরনের চরমপন্থার বিরুদ্ধে মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক আহ্বান।’
আরও পড়ুন: আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় হুমকির চিঠি দিয়েছে: র্যাবের মহাপরিচালক
এবারের র্যা লির প্রধান দুটি মোটিফ হচ্ছে মায়ের কোলে শিশু এবং নীল ষাঁড় (নীলগাই)। মায়ের কোলে শিশু যেমন নিরাপদ, সেখানে প্রতীকীভাবে বিশ্ব শান্তির বার্তা রয়েছে। এ ছাড়া বিপন্ন ও হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছে নীলগাইকে। এ ছাড়া শোভাযাত্রায় আরও চারটি মোটিফ প্রদর্শিত হয়েছে। তারা হল বাঘ, ময়ূর, ভেড়া ও হরিণ।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা মঙ্গল শোভাযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সমাবেশে পুরো সময় প্রটোকল প্রদান করে।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, ‘আপনি জানেন হুমকি দেওয়া হয়েছে, একজন আইনজীবী এমনকি মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধ করার জন্য হাইকোর্টে মামলা করেছেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি।’
পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা উল্লুকের মুখোশ তৈরি করলেও নিরাপত্তার কারণে মুখোশ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাস এলাকায় ঢাবির স্টিকার লাগানো যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
টিএসসির পাশের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটেও বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তালা দেওয়া থাকবে তবে রমনা কালী মন্দির, বাংলা একাডেমি, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাট গেটের পাশের গেট দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
আজ বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন তখন এলাকাটি তালাবদ্ধ থাকবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের পর কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না তবে বের হতে পারবে।