মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায় ভিজিএফের চাল আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী মিয়াসহ তিনজনের নামে মহম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. লাল্টু মিয়া বাদী হয়ে মহম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন নহাটা বাজারের চালের ব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তাঁর ভাই সমীর কুমার দে।
এদিকে একই অভিযোগে নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মঞ্জুর রহমান নামে অপর এক চাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে ৯০০ কেজি ভিজিএফের চালসহ আটক ১
থানা-পুলিশ ও ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার নহাটা ইউনিয়নে এক হাজার ৬২৭ জন দুস্থ, অসহায় ব্যক্তির জন্য ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ওই চাল তাঁদের মধ্যে বিতরণ না করে স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ ওঠে ইউপির চেয়ারম্যান আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন নহাটা গ্রামে চাল ব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তাঁর ভাই সমীর কুমার দের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের ২২ বস্তা চাল (১ হাজার ১০০ কেজি) উদ্ধার করেন।
এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নহাটা বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমানের গুদামে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের ২৭ বস্তা চাল উদ্ধার করেন ইউএনও মো. শাহিন হোসেন। এ সময় মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ভিজিএফের ২৯ বস্তা চাল জব্দ
তবে চাল আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আলী মিয়া বলেন, ‘মেম্বারদের (ইউপি সদস্য) উপস্থিতিতে ৩২২ বস্তা চাল এক হাজার ৬২৭ জন দুস্থ লোকের মধ্যে তিন দিন ধরে বিতরণ করেছি। মাস্টার রোলে সদস্যদের স্বাক্ষর আছে। ভিজিএফের চালে গন্ধ থাকে। তাই গরিব মানুষ ওই চাল খেতে চান না, ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। উদ্ধার হওয়া চালের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ইউএনও সাহেব আমার কাছে ভিজিএফের ৩০০টি কার্ড দাবি করেন। কিন্তু তালিকা চূড়ান্ত হওয়ায় তাঁকে কোনো কার্ড দিতে পারিনি। তাই আমার ওপর তাঁর রাগ ছিল।’
কার্ড চাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁরা কিছু কার্ড চেয়েছিলেন। তাঁরা রাজনীতি করেন। এ জন্য তাঁদের কার্ডের দরকার হয়। আমি চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা দিতে পারেননি। এর সঙ্গে ভিজিএফের ওই চাল উদ্ধার বা মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।’
আরও পড়ুন: চালের মূল্য সহনীয় পরিস্থিতিতে রয়েছে, দাবি খাদ্যমন্ত্রীর
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরীকুল ইসলাম বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে করা মামলাটি রেকর্ড করার পর দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি। কমিশন মামলা তদন্ত করবে।’