মাত্র চারশ’ টাকা বকেয়া থাকা হোটেল ভাড়ার জন্য খুন করা হয় মাছ ব্যবসায়ী রুবেল খন্দকারকে (৩০)। ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করে আবাসিক হোটেল স্বাধীনপার্কের ম্যানেজার আনিছুর রহমান। লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধ করে নিশ্চিত করা হয় মৃত্যু।
এ ঘটনায় আটক অভিযুক্ত আনিছুর রহমান শুক্রবার সকালে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আল ফয়সালের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন।
গ্রেপ্তার আনিছুর রহমান বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ভেদুরিয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদ জোমাদ্দারের ছেলে ও হোটেল স্বাধীনপার্কের ম্যানেজার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) বিজয় মন্ডল জানান, মাছ ব্যবসার কারণে প্রায় রাতে রুবেল খন্দকার হোটেল স্বাধীনপার্কে অবস্থান করতেন। এর অংশ হিসেবে ঘটনার দিন মঙ্গলবার (০৫ এপ্রিল) দুপুরে রুবেল ওই হেটেলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তখন ম্যানেজার আনিছুর রহমান হোটেলের রুম ভাড়ার ৪শ’ টাকা চাইলে রুবেল পরে দেবে বলে জানায়। ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে রুমে গিয়ে তার কাছে ফের ভাড়ার টাকা চাইলে হোটেল ম্যানেজারের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়ান রুবেল। এর একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে রুবেলের মাথায় আঘাত করেন আনিছুর। এতে রুবেল অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। লাশ হোটেলের রুমে রেখে ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
আরও পড়ুন: ডাকাতি করতে গিয়ে বাড়ির মালিককে খুন, ৭ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
বিজয় মন্ডল আরও জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে লাশ উদ্ধারে জন্য হোটেলের ওই রুমে গেলে রুবেলের লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পান। তখন তার ডান কান থেকে রক্ত ঝরছিল। ডান কান সংলগ্ন মাথায় হালকা আঘাত ও গলায় দুটি দাগ দেখতে পান। তখন বিষয়টি অস্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্ত শুরু করলে মাত্র দুই দিনের মধ্যে ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়। বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) বিকেলে রূপাতলী টেম্পোস্টান্ড থেকে অভিযুক্ত আনিছুর রহমানকে আটক করা হয়।
আটকের পর নিহত রুবেলের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আনিছুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক আল ফয়সাল তাকে কারাগারে পাঠান।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, ঘটনার মাত্র দুইদিনের মধ্যে খুনের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকার বিষয় উঠে আসেনি।