এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত রবিবার গভীর রাতে কেন্দ্রের আবাসিক ভবনের জানালা ভেঙে একই কক্ষে থাকা আট বালক পালিয়ে যায়।
তারা হলেন- যশোরের হৃদয় (১৭), ফারদিন দুর্জয় (১৫) ও আব্দুল কাদের (১৪), খুলনার রোহান গাজী (১৪) ও সোহাগ শেখ (১৭), নড়াইলের মুন্না গাজী (১৫), গোপালগঞ্জের শাহ আলম (১৮) এবং বরিশালের মাইনুর রহমান সাকিব (১৫)। পলাতক আটজনের মধ্যে সোমবার তিনজনকে উদ্ধার করা হয়।
এর মধ্যে হৃদয় ও দুর্জয়কে সোমবার বিকালে ও রোহান গাজীকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) জাকির হোসেন।
তিনি জানান, জানালার গ্রিল ভেঙে এককক্ষে থাকা কিশোররা পালিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরার ভিডিওচিত্র থেকে দেখা যায় রবিবার দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটের দিকে তারা পালিয়ে যায়।
শিশু উন্নয়নের এ কেন্দ্রটিতে এর আগেও পালিয়ে যাওয়া, একদিনে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা, আত্মহত্যাসহ অনেক অঘটন ঘটেছে।
যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কক্ষের দুর্বল জানালার কারণে পালিয়েছে আট কিশোর অপরাধী। অতিরিক্ত উচ্ছৃঙ্খল হওয়ার কারণে এই আট জনকে একটি কক্ষে স্পেশাল কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। ওই কক্ষের জানালার গ্রিল ভেঙে বিদ্যুতের কাজের জন্য ব্যবহৃত মই বেয়ে উঁচু প্রাচীর ডিঙিয়ে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, এর আগেও একাধিকবার পালানোর ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দী রাজু বিশ্বাস (১৬) নামে অপরাধী পালিয়ে যায়। সে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আউট ডোরে চিকিৎসা শেষে পালিয়ে যায়। রাজু ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার দেবকিনন্দপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব বিশ্বাসের ছেলে।
এছাড়া ২০১৪ সালের মে মাসের ২য় সপ্তাহে পালিয়ে যায় ৬ কিশোর অপরাধী। এরা হলেন- নড়াইলের নড়াগাতি থানার বাওসোনা গ্রামের মুজাহিদ মোল্লার ছেলে বাপ্পী (১৭), বগুড়া সদর উপজেলার ছোট কুমিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে রনি ওরফে জীবন (১৬) ও দুলাল প্রামাণিকের ছেলে আব্দুর রহমান ওরফে কাইল্যা (১৮), একই উপজেলার দক্ষিণ ফুলবাড়িয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে আশিকুর রহমান আশিক (১৮) ও সাইফুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী জিসান (১৬) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকার ফজর আলীর ছেলে জুনাইদ (১৮)।
এদিকে গত ১৩ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৮ বন্দী শিশুর ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। এতে তিন শিশু নিহত হন এবং ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় পাঁচ কর্মকর্তা ও সাত শিশুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা চলমান রয়েছে। ওই সময় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত রিপোর্টে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতি উঠে এসেছে।
গত অক্টোবরে তিন কিশোর বন্দী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরমধ্যে ২০ অক্টোবর পটুয়াখালির দশমিনা উপজেলার সায়েম হাওলাদার (১৫), ১৯ অক্টোবর ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার আবির হোসেন রানা (১৩) এবং ১৬ অক্টোবর সাকিব তালুকদার (১৫) নামে এক কিশোর আত্মহত্যার চেষ্টা করে।