যশোরের কেশবপুরে সুলতানা ইয়াসমিন নামে এক নারীর বিরুদ্ধে ১২ দিন বয়সী জমজ দুই সন্তানকে ডোবার পানিতে ফেলে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে উপজেলার সাহাপাড়া এলাকার নতুন মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে ২২ বছরের যুবককে পিটিয়ে হত্যা
এদিকে, বুধবার সকালে পুলিশ ডোবার পানি থেকে জমজ শিশু দুটির লাশ উদ্ধার ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তাদের মা সুলতানা ইয়াসমিনকে আটক করে।
অভিযুক্ত সুলতানা ইয়াসমিন স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিককে নিয়ে পৌর শহরের সাহাপাড়ায় তার বাবা আব্দুল লতিফের বাড়িতে বসবাস করতেন।
পুলিশ জানায়, ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল সুলতানা ইয়াসমিনের সঙ্গে আবু বক্করের বিবাহ হয়। দুইজনই এর আগে বিবাহিত ছিলেন। সুলতানার প্রথম পক্ষের সংসারে অহনা ইয়াসমিন নামে একটি মেয়ে রয়েছে। আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর সুলতানা বুঝতে পারেন তার স্বামী অন্য নারীতে আসক্ত। এ কারণে তাদের মধ্যে কলহ লেগে ছিল। সুলতানা স্বামীকে সুপথে ফেরাতে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ১০ নভেম্বর রাতে কেশবপুর শহরের মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে সুলতানা ইয়াসমিনের জমজ সন্তান হয়। এর মধ্যে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে।
পারিবারিক কলহের জেরে সুলতানা ইয়াসমিন গত ২১ নভেম্বর (মঙ্গলবার) রাত দেড়টার দিকে প্রথমে আরাফ নামে ছেলে সন্তানকে বাড়ির সামনের একটি ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে।
পরে ঘরে ফিরে তাসনীম নামে মেয়ে সন্তানকেও ওই রাতেই একই ডোবায় ফেলে দেয়। এরপর ঘরে ফিরে বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না বলে মিথ্যা কাহিনী তৈরি করে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাতটার দিকে ওই ডোবা থেকে জমজ বাচ্চা দুইটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
বুধবার সকালে সুলতানা ইয়াসমিনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুলতানা ইয়াসমিন তার জমজ বাচ্চা দুটিকে ডোবার পানিতে নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহিরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সুলতানা ইয়াসমিন স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জের ধরে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে নিজ সন্তানদের ডোবার পানিতে নিক্ষেপ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে কেশবপুর থানায় মামলা হয়েছে।