বুধবার সকালে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রাতারগুলের মতো জলাভূমিগুলো বিভিন্ন সংরক্ষিত প্রজাতির আবাসস্থল এবং মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করার মতো পরিবেশগত সেবা দেয়। সিলেটে অবস্থানকালে আমার রাতারগুল বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল। আমি নৌকায় চড়ে এলাকাটি বেড়িয়েছি এবং জলাভূমির বনটির দারুণ উদ্ভিদ এবং প্রাণী বৈচিত্র্য দেখেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সফলতা অব্যাহত রাখা এবং প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট উভয় ধরনের দুর্যোগের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতাবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত অঞ্চলগুলোর সুরক্ষায় নেতৃত্বদানকারী যৌথ পরিচালনা কমিটিগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। আমি এই অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।
মিলার উল্লেখ করেন, সিলেটে দেখার ও করার মতো অনেক কিছুই আছে। তবে আমার এবারের আসার অন্যতম কারণ ছিল শেভরন করপোরেশনের বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্ট পরিদর্শন করা। শেভরনের মতো আমেরিকান কোম্পানিগুলো কেবল যে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নয়, এ দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে একটি বড় নিয়োগকারী হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
‘শেভরন স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য কাজ করছে। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠানটি যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে-এ সফরে তা দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম আমি,’ বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন এবং অন্য কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখুক এবং এ দেশের অর্থনীতিতে নতুন নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি চালু করুক। এতে ক্রমেই আরও বেশিসংখ্যক লোকের সঙ্গে সমৃদ্ধি ভাগ করে নেয়া যাবে এবং আমাদের উভয় দেশই উপকৃত হবে।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান এবং সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল ইসলামের সঙ্গে বুধবার সকালে তার বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দূত বলেন, আমরা সিলেট অঞ্চলে মানবপাচার বিরোধী কার্যক্রম এবং অবৈধ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে গেল গ্রিষ্মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি।
মানবপাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা এবং পাচার থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষের বিভিন্ন সহায়তা পাওয়ার সুযোগ বাড়ানো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, শেভরনের মতো করে এলাকায় নতুন চাকরি সৃষ্টির উপায় অনুসন্ধান করা, রাতারগুলের মতো বিশেষ অঞ্চলগুলো সংরক্ষণ করা বা মানবপাচার বন্ধ করা আমাদের অঙ্গীকার।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নতুন নতুন প্রযুক্তি, পরিবেশ এবং নিরাপত্তাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে উল্লেখ করে মিলার বলেন, এমন একটি সময়ে কোম্পানিগুলোর জন্য উপযুক্ত বিনিয়োগ এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতার টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং যেসব নীতি এবং মূল্যবোধ বাংলাদেশের লক্ষ্যণীয় প্রবৃদ্ধিকে সম্ভব করেছে সেগুলোকে জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশকে একত্রে কাজ করতে হবে।