সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় জেলা পুলিশের একটি দল কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (বিকাল ৩টা) আকবরকে সিলেট জেলা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসার জন্য পুলিশের একটি দল তাকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান।
তিনি জানান, আকবরকে সিলেটে নিয়ে আসার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
এদিকে, পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেকুজ্জামান বিকাল ৩টায় জানান, রাতে আকবরকে জেলা পুলিশ পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করতে পারে।
প্রথমে স্থানীয়রা আটক করে রায়হান হত্যায় মূল অভিযুক্ত সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বন্দর ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করা এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, স্থানীয় খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের হাতে প্রথমে পাকড়াও হন আকবর। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে কেঁদে ফেলেন আকবর এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয়রা তাকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে নগরীর কাস্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোরে ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান।
রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, ফাঁড়িতে ধরে এনে রাতভর নির্যাতনের ফলে রায়হান মারা যান। ১১ অক্টোবর রাতেই রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন।
এ ঘটনায় এসএমপির একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে সত্যতা পায়। এর পর দিন ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ১৩ অক্টোবর আকবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যায়।
তখন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দুইদিন পরই আকবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যান। পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয়ার ২৬ দিন পর গ্রেপ্তার হন আকবর।
এদিকে, গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর পিবিআই সিলেটের আখালিয়া নবাবি মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন কাজ শেষ করে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়।
পিবিআই এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দুই দফায় আটদিন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তবে তারা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হননি। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।