বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসায় কক্সবাজারে বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পরিবার পরিকল্পনা সেবার আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মো.কামরুল হাসান।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে কক্সবাজারের উখিয়াতে ইউএনএইচসিআরের অর্থায়নে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রোহিঙ্গাদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ত্রাণ সচিব বলেন, আমাদের হিসাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিবছর কম বেশি ৩৫ হাজারের মতো নতুন শিশু জন্ম নেয়। আমরা সেখানে আমাদের দেশে প্রচলিত পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্প্রসারিত করছি।
তিনি বলেন, তাদের কিছুটা ধর্মীয় অনুভূতি আছে। তাই তারা এটা (পরিবার পরিকল্পনা) করতে চায় না। তাদের জোর করে কিছু করা হচ্ছে না, মোটিভেট করে বুঝিয়ে এ কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আশার কথা হলো তারাও এ কাজে আগ্রহী হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যকে এক লাখ রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের অনুরোধ ঢাকার
বিশেষায়িত হাসপাতাল নিয়ে ত্রাণ সচিব বলেন, আমরা উখিয়াতে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। এখানে মূলত সেখানে যারা বাংলাদেশে অবস্থানরত বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক আছে তাদের এবং যারা স্থানীয় বাংলাদেশি আছেন তাদের স্বাস্থ্যসেবাটা আরও উন্নত করার জন্যই এটা করা হচ্ছে।
ত্রাণ সচিব বলেন, ১৭ হাজার পাঁচশ’ বর্গফুটের এই হাসপাতালটা হবে। এখানে কক্ষ সংখ্যা ৬০টি। এখানে চোখের চিকিৎসা, দাঁতের চিকিৎসাসহ অন্যান্য অপারেশন হবে। এখানে টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থাও আছে। এই হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসাগুলো নিশ্চিত করা হবে।
বস্তিবাসী বা দারিদ্র সীমার নিচে থাকা বাংলাদেশিদের জন্য এ ধরনের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার কোনো উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, সারাদেশে আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার, সেকেন্ডারি হেলথ কেয়ার আর টার্সিয়ারি হেলথ কেয়ার এই তিন ধরনের স্বাস্থ্য সেবা আছে। প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের সেন্টারগুলো আমাদের গ্রামে-গঞ্জে অবস্থিত। শহরে আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার নেই। এর কারণ লোকাল গভমেন্টের ম্যান্ডেট আছে আরবান মানুষকে হেলথ কেয়ার তারা দেবে। সে হিসেবে তাদের দেয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। তবুও তারা চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শহরে সেকেন্ডারি ও টার্সিয়ারি লেভেলের যে হাসপাতালগুলো আছে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মানুষ জড়ো হয়। এতে আমাদের হাসপাতালগুলোতে ভিড় হয়। আমরা একটা নেটওয়ার্কের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবাকে রাখি যাতে সবাই সেবা পায়। এ জন্যই কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কমনওয়েলথ দেশগুলোর সহায়তা চায় ঢাকা