ভারতবর্ষে রেল যোগাযোগ চালুর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার রেলস্টেশন চালু হয়। দেশের প্রথম দোতলা স্টেশন এটি। ঐতিহ্যবাহী এ রেলস্টেশনের মূলভবন নানা সমস্যায় জর্জরিত। সংস্কার ও সংরক্ষণেরও কোনো উদ্যোগ নেই। ব্রিটিশ আমলের এ স্থাপত্যের শরীরজুড়ে এখন পরগাছাদের বসবাস। রেলস্টেশনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সেই সময় ইউরোপ থেকে সৌন্দর্যবর্ধক বহু বিরল প্রজাতির গাছ নিয়ে এসে লাগানো হয়েছিল। এর মধ্যে নানা প্রজাতির ফুলের গাছও ছিল। সেসবের মধ্যেকার একটি বিরল প্রজাতির পাম ও একটি কাঠমল্লিকা ফুলগাছ এখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
আলমডাঙ্গা স্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে কুলির কাজ করা হায়দার আলী বলেন, বয়েস তো অনেক হলো। বহু বছর এখানে কুলির কাজ করি। স্টেশনের মেরামত খুব দরকার। সেই ইংরেজরা কবে করে গেছে।
স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রবীণ আনছার আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এই স্টেশনের দ্বিতল ভবন মূলত ১৭৫৩ সালের পরে তৈরি। তখন ব্রিটিশরা এই ভবনকে এই এলাকার নীল চাষের অফিস হিসেবে ব্যবহার করত। এই স্টেশনের নিচের ভবনে যে কত নীল চাষির রক্ত মিশে আছে, সেটা বলাই বাহুল্য। ১৮৬২ সালের পরে এটা রেলস্টেশন করে ব্রিটিশরা। বর্তমানে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুব দরকার।
আরও পড়ুন: অবশেষে ‘ডি ক্লাস’ মর্যাদায় চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন
বেশ কয়েক বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এ রেলস্টেশনের মূল ভবনের কোনো সংস্কার করা হয়নি। দীর্ঘদিনের অবহেলায় ঐতিহ্যের এ স্মারকের অবয়বজুড়ে জন্মেছে আগাছা।
আলমডাঙ্গাবাসী রেললাইনের সংস্কার, স্টেশনের সংস্কার, ঢাকাগামী ট্রেনের বরাদ্দ দেওয়া আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন ট্রেনের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে যেতে বাচ্চা নিয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আলমডাঙ্গা স্টেশনটা অনেক পুরোনো। সেই হিসেবে এই স্টেশনের আরও উন্নয়ন খুব দরকার। এই স্টেশনে বসার পরিবেশ ভালো না। ভবনগুলোরও দুর্দশা কর্তৃপক্ষ খেয়াল করে না।