অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে রাত ৮ টায় শেষ হয়েছে। মামলার ২য় স্বাক্ষী সিফাতের স্বাক্ষী গ্রহণ চলমান রেখে রাত ৮টায় আদালত মুলতবি করে। বুধবার সকাল থেকে আবার সিফাতের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও তারপর আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা চলবে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম।
মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়াকে আসামি বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ ও বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকতসহ তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জেরা শেষ করার পর বিকালের দিকে দ্বিতীয় স্বাক্ষী সিফাতের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সোমবার স্বাক্ষগ্রহণের প্রথম দিন শুধুমাত্র বাদী শারমিন শাহরিয়ারের স্বাক্ষগ্রহণ ও ১২ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। পরে আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, শারমিন শাহরিয়ারের অসমাপ্ত জেরা সম্পন্ন করে অপর পাঁচ স্বাক্ষীর স্বাক্ষগ্রহণ করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্বাক্ষী সিফাতের স্বাক্ষগ্রহণ শুরু করা সম্ভব হয় বলে সরকারি কৌশলী জানান। ২৫ আগস্ট বুধবারও স্বাক্ষগ্রহণ চলবে।
এদিকে সিনহা হত্যা মামলার স্বাক্ষগ্রহণের দ্বিতীয় দিন সকাল ১০ টায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। রাত ৮ টার পর তাদের কারাগারে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু, বিলম্বিত করার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের
২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব-১৫। হত্যাকান্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারাগারে রয়েছে। এরমধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলো, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: ৩ আসামির জামিন আবেদন খারিজ