সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন বলে রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছেন।
সোমবার বিকালে সিনহা হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এই অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুনঃ সিনহা হত্যা: ৩ আসামির জামিন আবেদন খারিজ
তিনি জানান, মামলার শুরু থেকেই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দরখাস্ত দিয়ে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত ১১টি দরখাস্ত দিয়ে মামলা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এসব দরখাস্ত গ্রহণ করেননি।
একই অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। তিনি জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবী নানা অজুহাতে মামলা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুনঃ সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন, ওসি প্রদীপসহ ৬ জনের জামিন নামঞ্জুর
অপরদিকে মামলার বাদী মেজর অব. সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন আদালতের কাছে সিনহা মামলার সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন।
আগামী ২৪ ও ২৫ আগস্ট অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।
সোমবার বিকাল ৫টায় আদালতের কার্যক্রম মূলতবি ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় এই মামলার সকল আসামিদের আদালতে নিয়ে আসা হয়। মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১ থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষী এই তিন দিন সাক্ষ্য দেবেন। এ মামলায় অভিযুক্ত ১৫ জন আসামিরা সকলেই কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামিদের উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করে ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই একটানা তিন দিন বাদীসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। সরকার গত ১১ আগস্ট থেকে লকডাউন তুলে নিলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ নতুন করে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য্য করেন। যথাসময়ে বাদীসহ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন আদালত।
আরও পড়ুনঃ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারাগারে রয়েছে। এর মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।