সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুই বাংলাদেশির লাশ দুইদিন ধরে নো ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশগুলো উদ্ধার করা যায়নি।
লাশগুলো সীমান্তের বাংলাদেশ না ভারত অংশে রয়েছে এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় লাশ উদ্ধারে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।
এর আগে বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের ডোনা সীমান্তের ১৩৩১ নম্বর পিলারের পাশে দুই বাংলাদেশির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশকে জানান।
আরও পড়ুন: সিলেট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
নিহতরা হলেন, সীমান্তবর্তী এলাগুল গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র আসকর আলী (২৫) একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র আরিফ হোসেন (২২)।
নিহত আরিফের পরিবারের এক সদস্য বলেন, স্থানীয় লালবাজারে যাওয়ার কথা বলে গত মঙ্গলবার বিকেলে আরিফ ও আসকর বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। ডোনা সীমান্ত এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে তারা শুনেছেন আসকর ও আরিফ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উখিয়াং এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন। এ সময় তাদের ওপর গুলি করে বিএসএফ। ঘটনাস্থলেই দুজন মারা গেলে তাদের লাশ সীমান্তের ১৩৩১ মেইন পিলারের পাশে ফেলে রাখা হয়।
পুলিশের ধারণা, আসকর ও আরিফ মঙ্গলবার রাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে থাকতে পারেন। ওই রাতে কিংবা ভোরের কোনো এক সময়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বা সে দেশের খাসিয়া আদিবাসীদের গুলিতে মারা যেতে পারেন তারা।
আরও পড়ুন: সিলেটে রেস্টুরেন্ট মালিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
১৯ বিজিবির সুরইঘাট ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দু’জনের লাশ উদ্ধারে বৃহস্পতিবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে।
বিজিবির ওই কর্মকর্তারা জানান, পতাকা বৈঠকে হত্যার দায় অস্বীকার করেছে বিএসএফ। এমনকি লাশগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। যদিও বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে লাশগুলো ভারতের অভ্যন্তরে রয়েছে।
বৈঠকে লাশগুলো যে স্থানে পড়ে আছে সেই স্থান কোন দেশে পড়েছে তা চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, লাশ ভারতের অভ্যন্তরে থাকলে সে দেশে ময়নাতদন্ত হবে। এরপর আরেক দফা পতাকা বৈঠক করে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এতে লাশ উদ্ধার ও হস্তান্তরে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, লাশ দুটি সীমান্তে এখনো পড়ে আছে। ওই জায়গা ভারতের অভ্যন্তরে হওয়ায় এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিজিবি ও বিএসএফ যৌথভাবে লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।