সিলেটের ওসমানীনগরে এক রাতে তিন প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির হয়েছে। এতে প্রায় ২৩ ভরি স্বর্ণালংকারসহ টাকা লুটের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মামুন আহমেদ, লতিবপুর গ্রামের মিজানুর রহমান ও পার্শ্ববর্তী আশিক আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাতদের হামলায় দুই পরিবারের তিনজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- লতিবপুর গ্রামের ছানাওর আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৬০), ছেলে হোসাইন আহমদ (২২) ও মাধবপুর গ্রামের সিরাজ মিয়া (৪০)। তাদের বালাগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ড্রেন থেকে পাওয়া গেল থানার লুট হওয়া শটগান
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে লতিবপুর গ্রামের প্রবাসী মিজানুর রহমানের বাড়িতে বসতঘরের কেচি গেট ও দরজা ভেঙে ১২–১৩ জন ডাকাত ঢুকে মিজানের ছোট ভাই হোসাইন আহমদের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে একটি কক্ষে বেঁধে রাখে। এরপর অপর কক্ষে হোসাইন আহমদের মা আনোয়ারা বেগমকে রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে।
একই রাতে পাশের মাধবপুর গ্রামের মামুন আহমদের বাড়িতে সাত–আটজনের একদল ডাকাত দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহকর্মী সিরাজ মিয়াকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। তখন মামুন আহমদের ঘরে থাকা ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার, ব্রিটিশ পাউন্ডসহ প্রায় এক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এ ছাড়াও, লতিবপুর গ্রামের মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আশিক মিয়ার বাড়ির কেচি গেট ও দরজা ভেঙে ১ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১১ শ’ টাকাসহ কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। ডাকাতিকালে আশিক মিয়ার পরিবারের লোকজন বাড়িতে ছিলেন না। সকালে গ্রামে ডাকাতি হয়েছে খবর পেয়ে তারা বাড়িতে এসে দেখেন, তাদের ঘরের গেট ও দরজার তালা ভাঙা এবং আলমিরায় থাকা স্বর্ণালংকার নেই বলে জানায় পুলিশ।
আশিক মিয়ার স্ত্রী পারভিন বেগম বলেন, ‘আমি আমার বাপের বাড়িতে ছিলাম। সকালে গ্রামে ডাকাতি হয়েছে শুনে বাড়িতে এসে দেখি আমার ঘরের গেট ও দরজা খোলা এবং আলমিরায় রাখা স্বর্ণালংকার ও টাকা নেই।’
আহত হোসাইন আহমদ বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে গেট ও দরজা ভেঙে ১২ থেকে ১৩ জন ডাকাত ঘরে ঢুকে আমাদের মারধর করে ছয় ভরি স্বর্ণ লুটে নেয়। রড দিয়ে তারা আমার মাথায় আঘাত করে। আমার মাকেও তারা মেরেছে।’
মাধবপুর গ্রামের মামুন আহমদ বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে সাত থেকে আটজন ডাকাত গেট ও দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার, পাউন্ডসহ নগদ ১ লাখ টাকা লুটে নেয়। এ সময় তারা আঞ্চলিক ও শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছিল। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে তারা আমার ঘরের সব আলমারি ভেঙে তছনছ করে। এরপর আমাদের ঘরে বেঁধে রেখে চলে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার সময় দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার শব্দ শুনতে পেয়েছি।’
ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: গোয়াইনঘাটের সালুটিকর-কচুয়ারপার সড়কে অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ