একই সাথে অপহরণের অভিযোগে আসামি মারুফুল ইসলামকে ১৪ বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক কাজী মুরাদে মওলা এ আদেশ দেন।
সদর উপজেলার তুলসীঘাটে বাসে পেট্রোল বোমা হামলারও আসামি মারুফুল ইসলাম ভবানীপুর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে।
এ মামলায় বাকি তিন আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- মারুফুলের বোন বিজলী খাতুন, শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জবা খাতুন। এদের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দৌলতপুরে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে স্বামী-স্ত্রী বাসা ভাড়ায় থাকতেন। ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে তিনজনকে আসামি করা হয়েছিল।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি গাইবান্ধা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের গেটের সামন থেকে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিয়ে যায় মারুফুল। সে সময় ওই ছাত্রীকে ঘরে আটকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি।
এ ঘটনার দুই দিন পর সদর থানায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ মির্জাপুরে অভিযান চালিয়ে মারুফুলকে গ্রেপ্তার ও ভুক্তভোগী ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রীকে পরদিন গাইবান্ধায় আনা হলে ধর্ষণের অপমান সইতে না পেরে গলায় ওগনা পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাঙ্গাহীর হোসেন বলেন, ‘এ মামলায় মারুফুল হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। আজ রায়ের দিন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন মারুফুল।’
দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীগণের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন বলেও জানান তিনি।
গাইবান্ধার স্পেশাল পাবলিক প্রসিউকিটর (এপিপি) মহিবুল হক সরকার মোহন জানান, রায় ঘোষণার পর আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিউকিটর (এপিপি) মোছা. শিউলী বেগম।
উল্লেখ, ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার সদর উপজেলার তুলসীঘাটে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির জোটের হরতাল-অবরোধের সময় ঢাকাগামী নাপু এন্টারপ্রাইজ নামে যাত্রীবাহী নৈশ কোচে পেট্রোল বোমা হামলায় শিশু ও নারীসহ আটজন নিহত হয়।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মারুফুল সেই বোমা হামলা মামলার আসামি ছিলেন। সম্প্রতি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ও আদালতের এক আইনজীবী।