বুধবার গাজীপুর পুলিশ লাইনের সামনে নবনির্মিত নান্দনিক ভাস্কর্য ‘চেতনায় স্বাধীনতা’ এর ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় গাজীপুর প্রান্তে বক্তব্য দেন জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। এছাড়া দুই প্রান্তে ঢাকার ডিআইজি হাবিবুর রহমান, সিএমপি কমিশনার খন্দকার লুৎফর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ, আমিনুল ইসলাম, নন্দিতা রায়সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর
এর আগে বিকালে আইজিপি বেনজীর আহমেদ ‘চেতনায় স্বাধীনতা’ যতনে স্বাধীনতা ভাস্কর্য উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এরপর উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা ভাস্কর্যের পাদদেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া, জাতির পিতা ও জাতীয় চার নেতার আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক বার্তা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যেই সৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পর কুষ্টিয়ায় এবার বিপ্লবী বাঘাযতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর
যে সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্যের উপর আঘাত আসছে সেই সময়ে এটির উদ্বোধন করে ভাস্কর্য বিরোধীদের একে একটি প্রতিবাদ বলে মনে করছেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
নান্দনিক ভাস্কর্যটিতে উদীয়মান লাল সূর্যের বুকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সোনালি মানচিত্র। মানচিত্রের নিচের অংশে স্থাপন করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। তার নিচে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতার অবয়ব। সবই ব্রোঞ্জের তৈরি। ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য, ২০ ফুট প্রস্থ ও ২৫ ফুট উচু এই ভাস্কর্যটি। সুবিশাল নৌকা এবং মাস্তুলের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে মুক্তি সংগ্রামের স্মারক সৌধ। মাস্তুলের বাঁ দিকে পোড়ামাটির চারটি ক্যানভাস যেন সাক্ষ্য দিচ্ছে ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক সব ঘটনা।
আরও পড়ুন: ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
শিল্পের নান্দনিকতায় মাস্তুলের ডান দিকে বর্ণনা করা হয়েছে ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন ও ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। প্রায় এক বছরে ধরে এ সৌধটি নির্মাণের কাজ করা হয়।
চেতনায় স্বাধীনতার স্থপতি মাহদী মাহমুদুল হক পুলক জানান, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের ভাবনার ভিত্তিতেই এটি তৈরি করা হয়েছে। কংক্রিটের একটি শক্তিশালী কাঠামোর উপর নির্মাণ করা হয়েছে সৌধটি। পোড়ামাটির দেয়ালে আঁকা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য। রয়েছে জাতীয় চার নেতা- তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানের ভাস্কর্যও। সন্ধ্যা হলেই আলো ঝলমলে হয়ে উঠবে পুরো সৌধটি। মূল বেদির দুই দিকে তৈরি করা হয়েছে জলাধার। নান্দনিক এ ভাস্কর্যটি যে কোনো পথচারীর নজর কেড়ে নিবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ও অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ