প্রবল বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি বেড়ে তিন কোটি টাকার ফুলছড়ি নীলকুঠি আশ্রয়ণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। কখন যে ধসে যাবে এই আতঙ্কে ঘরও ছাড়ছেন অনেকেই।
এদিকে, বর্তমানে এই অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাবেক ফুলছড়ি হেড কোয়ার্টার থেকে সামনে যমুনা নদীর দিকে তাকালেই চোখে পড়বে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। চারপাশে থৈ-থৈ পানি। দুটি ব্রিজসহ আশ্রায়ণ প্রকল্পের রাস্তা এখন পানির নিচে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম সরকার জানান, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পটি করা হয়েছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য চারপাশে জিও টেক্স দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আশ্রায়ণ প্রকল্পের প্রায় দুই শতাধিক বাসিন্দা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মহসিন আলী বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে আছি। চারদিকে পানি আর পানি। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট-ব্রিজ। এখন নৌকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। একবার যাতায়াত করলে নৌকা ভাড়া লাগে ১০ টাকা। এর ফলে আশ্রায়ণ এলাকার মানুষের যোগাযোগ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কেউ কেউ আশ্রয়ণ প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট বলেন, ‘চরাঞ্চলে পানিতে ডুবে গেছে অনেক ফসলের খেতসহ ঘরবাড়ি। পানি বৃদ্ধির কারণে সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দি, বাশহাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া, রতনপুরসহ অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের বেগুন, ঝিঙ্গা, চিচিংগা, লাউ, কুমড়া, করলা, ঢ্যারস, রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে।’
আরও পড়ুন:যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে, বন্যার আশঙ্কা
এদিকে সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ির চরাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে।
এব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান দোলন বলেন, বর্ষা এলেই ওই এলাকার চারপাশে পানি জমে। তবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারপাশ ও যোগাযোগের রাস্তাসহ ডুবে গেলেও মজবুত ও শক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।