চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর উপর অবস্থিত শত বছরের পুরানো কালুরঘাট সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সংস্কারের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে পরবর্তী ৩ মাসের জন্য এই সেতুতে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
সংস্কারের পর সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: পদ্মাসেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে অটোরিকশা চালক নিখোঁজ
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে এ সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল করবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্ব) প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সেতুটি ৩ মাসের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি। তবে আমরা আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এটি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করব।’
সেতুটি মেরামত করে চালু না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেল চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইতোমধ্যে কর্ণফুলীতে ফেরি চলাচল চালু করেছে। সেতুটি মেরামতের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
রেল সূত্র জানায়, আগামী সেপ্টেম্বরে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ট্রেন লাইনসহ সেতুর ডেকিং, পাটাতন মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এ সংস্কার কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেতু বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ।
গত ১৮ জুন বুয়েটের পরামর্শ অনুযায়ী সেতুটি মেরামতের জন্য রেলওয়ের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শতবর্ষী জরাজীর্ণ এই সেতু সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে।
এদিকে সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে। মোট তিনটি ফেরির ব্যবস্থা রয়েছে। ২টি ফেরি চলাচল করবে।
আর ১টি ফেরি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ফেরির টোলের হার নির্ধারণ করা হলেও টোল আদায়ে কোনো ইজারাদার পায়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
অনুমোদিত ফেরির টোল হারে দেখা গেছে, রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ির জন্য ৫ টাকা, মোটরসাইকেলের জন্য ১০ টাকা, ব্যাটারিচালিত তিন ও চার চাকার গাড়ির জন্য ২৫ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ৫৫ টাকা, মাইক্রোবাস ও পিকআপ ৯০ টাকা, মিনিবাস ১১৫ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানবাহনের (পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর) জন্য ১৩৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, বড় বাস ২০৫ টাকা, মাঝারি ট্রাক ২২৫ টাকা, ভারী ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা এবং ট্রেইলারের জন্য ৫৬৫ টাকা টোল প্রদান করতে হবে।
বোয়ালখালী উপজেলা, পটিয়ার পূর্ব ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ এবং নগরীর চান্দগাঁও ও মহোড়া এলাকার প্রায় ১০ লাখ মানুষের নদী পারাপারের জন্য সেতুটির বিকল্প নেই।
বিআর দীর্ঘদিন ধরে ১৯৩১ সালে নির্মিত কালুরঘাট সেতু প্রতিস্থাপনের জন্য কাজ করছে এবং প্রাথমিকভাবে এটিকে রেলওয়ে সেতু হিসেবে নির্বাচন করেছে।
১৯৬০-এর দশকে সেতুটি রেল ও সড়ক সেতুতে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক চালু হলো ইলেকট্রনিক টোল আদায় ব্যবস্থা